বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার (প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা) বরাদ্দ দিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

আজ সোমবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার হস্তক্ষেপ, বিশেষত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হস্তক্ষেপের খবর নানাভাবেই প্রকাশিত হয়ে থাকে। এসবের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি চক্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্য তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে। বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানামুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যে ‘বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে’ বিগত দিনে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কারা এই টাকা নিয়েছে, তা সুনির্দিষ্ট না করলেও অখ্যাত দুটি প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের ঘোষিত ২৯ মিলিয়ন ডলারের খোঁজ পায়নি এনজিও ব্যুরো১৮ ঘণ্টা আগে

বিবৃতিতে সিপিবির নেতারা বলেন, এসব বিষয়ে আলোচনায় অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে নীরবতা পালন করছে, যা মোটেই কাম্য নয়। বাংলাদেশে কারা এই টাকা পেয়েছে এবং কীভাবে খরচ করেছে? দেশের রাজনীতিতে বা অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা কীভাবে ‘হস্তক্ষেপ’করেছে, এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেশবাসী জানতে চায়।

বিষয়টি স্বচ্ছতার সঙ্গে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে এবং দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো বিদেশি শক্তি ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অপতৎপরতা বন্ধে দৃঢ় ভূমিকা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সিপিবি।

আরও পড়ুনবাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন নিয়ে আবার কথা বললেন ট্রাম্প২২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনযে সংস্থার নাম কেউ শোনেনি, তারাই পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ২৯ মিলিয়ন ডলার: ট্রাম্প২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ শ র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরিতে না ফেরালে রাজপথ ছাড়বেন না ইআরপিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা

পাঁচ মাস ধরে বেতন নেই। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ, কেউ আবার চাকরির বয়সসীমা পার করে এখন আর নতুন কোথাও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই প্রকল্প শেষের অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তারা—যারা ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এই অবস্থায় নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীরা। 

আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি হলো স্থায়ীকরণের মাধ্যমে চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেইসঙ্গে গত চার মাসের বকেয়া ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভরত কর্মীদের একজন বলেন, সরকারের ডাকেই তো আমরা এসেছিলাম। ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা। তখন যদি পেছনে না ফিরে মানুষকে সেবা দিতে পারি, আজ যখন একটু স্থিতি এসেছে—তখন কেন আমরা উপেক্ষিত হবো? ৫ মাস ধরে একটা টাকাও পাইনি, পরিবার চালানো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিপসমে কর্মরত ইআরপিপির মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এখন বয়স ৩৫ ছাড়িয়েছে। সরকারি চাকরির আবেদনের শেষ সীমা পেরিয়ে গেছি। এখন আমাদের বাদ দিয়ে নতুন অদক্ষ জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। এটা শুধু অবিচার না, আমাদের মর্যাদায় আঘাত।

ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টারের ডাটা অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা, স্কুলের বেতন দিতে পারিনি। স্ত্রী-সংসার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। করোনার সময় এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাকেই আমি কাজে গিয়েছিলাম, এখন সেই অধিদপ্তরের সিঁড়িতেই বসে থাকতে হচ্ছে দাবি আদায়ের জন্য।

ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত এসব স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, করোনার সময় গড়ে তোলা আরটি-পিসিআর ল্যাব, ডেডিকেটেড আইসিইউ বা আইসোলেশন ইউনিটে তারাই প্রথম দিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ আজ তাদের বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। 

তারা বলছেন, আমরা চাকরি ভিক্ষা চাই না। আমরা যেটুকু প্রাপ্য, সেটুকু চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চলবে, তবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেয়া হলো কেন? আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করে অন্যদের সুযোগ দেওয়া মানে অবিচারকে পুরস্কৃত করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ