কতিপয় দল, কতিপয় লোক বিএনপিকে এক কোণে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে: মির্জা আব্বাস
Published: 25th, February 2025 GMT
বিএনপি ও দলের শীর্ষ নেতাদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু মানুষ বিএনপিকে এক কোণে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন বলেছেন, ‘ঈর্ষান্বিত কতিপয় মানুষ, কতিপয় দল, কতিপয় লোক বিএনপিকে এক কোণে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিএনপিকে ভারতের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডন চেম্বার এলাকায় সলিমুল্লাহ সড়কের ওপর আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। যারা বিএনপিকে ‘ভারতের দালাল’ হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে তাদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেছেন, ‘আমাদের বিএনপি কখনোই ভারতের তাঁবেদারি করে নাই। যদি তাঁবেদারি করত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জীবিত থাকতেন, উনি মারা যেতেন না। উনি ভারতের তাঁবেদারি করেন নাই বলে উনাকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে, মরতে হয়েছে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো, দ্রুত নির্বাচনী রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। এতে সভাপিতত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ।
সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে অন্য কোনো নির্বাচন নয় উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘১৭ বছর রাজপথে লড়াই করেছি। আমাদের পাঁচ হাজার নেতা জীবন দিয়েছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী আহত অবস্থায় আছে। আমার মতো লোক আমি ১৩ বার জেল খেটেছি। এই মঞ্চে যারা আছে সবাই মামলা খেয়েছে, কমবেশি। এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নয়। এটা সংসদ নির্বাচনের জন্য।’
আরও পড়ুনআমরা কি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছি স্থানীয় নির্বাচনের জন্য, প্রশ্ন গয়েশ্বর রায়ের৫৬ মিনিট আগেযারা স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলছেন, তাঁদের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আপনাদের উদ্দেশ্য দুরভিসন্ধিমূলক। আপনাদের উদ্দেশ্য ষড়যন্ত্রমূলক। কোনো পরিস্থিতিতেই দেশের মঙ্গলের জন্য এটা আপনারা চান না।’
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, আজহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া, সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ–অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ প্রমুখ।
আরও পড়ুননির্বাচন বিলম্বিত হলে কারা সুবিধাপ্রাপ্ত হবে, এটা দেখার বিষয়: তারেক রহমান১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ ক ব এনপ র র জন য রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।