আ.লীগ অফিসের ধংসস্তূপের ওপর জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত
Published: 10th, July 2025 GMT
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ধংসস্তূপের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। আজ বুধবার সকাল থেকে এ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণকাজের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা গণপূর্ত বিভাগ।
ফরিদপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, সারাদেশে অভিন্ন বাজেটে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। আগামী ৫ আগস্টের আগে এ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। এ কাজের কত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা তার জানা নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘ডাইরেক্ট প্রক্রিউরমেন্ট মেথডে’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে শহরের হাসিবুল হাসান লাবলু সড়কের উত্তর পাশে নির্মিত আওয়ামী লীগে কার্যালয়ের যে কাঠামোটুকু অবশিষ্ট ছিল; তা বড় হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হচ্ছে। এ কাজে নিয়োজিত আছেন সাতজন নির্মাণশ্রমিক। কাজ তদারকি করছেন ঠিকাদার সোহান আল মামুন। তিনি জানান, গণপূর্তের এ কাজটি তারা পেয়েছেন। আজ থেকে তারা কাজ শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের ওই কার্যালয়টি যেখানে ছিল সেই জায়গাটির মালিকানা জেলা প্রশাসন। ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে শেখ রাসেল ফাউন্ডেশনের নামে ২৬ শতাংশ জমি একশনা বন্দোবস্তের ভিত্তিতে ইজারা নেন শামীম হক। পরে ওই জায়গাটি শেখ রাসেল স্কয়ার নামে পরিচিতি পায়। শামীম হক পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর পরে ওই জায়গায় শেখ রাসেল ক্রিয়া চক্রের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়। এ কার্যালয়টি ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ ও আব্দুর রহমান।
জুলাই আন্দোলনে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৪ সালে জুলাই আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে ৪ আগস্ট বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর করে। পরদিন ৫ আগস্ট দ্বিতীয় দফার হামলায় বিক্ষুব্ধ জনতার রুদ্ররোশে কার্যালয়টি ধংসস্তূপে পরিণত হয়। গত ইদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় ওই জায়গাটি দুঃস্থ ব্যক্তিদের জন্য স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দেশব্যাপী ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি উদ্যোগে। গত সোমবার (৭ জুলাই) জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদপুর শহরে কোথায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা যায় সে ব্যাপারে সরেজমিনে কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেন।
তিনি জানান, এর মধ্যে বর্তমানে যে জায়গায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে সে জায়গাসহ পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে একাত্তরের শহীদের নাম সম্বলিত বেদির আশে পাশে ও রাজবাড়ি রাস্তার মোড় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের জায়গাটি যেটি পরে ন্যায্যমূল্যের সামগ্রী বিক্রির কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল নিরাপত্তাসহ সব দিক বিচার বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে জুতসই হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সোহরাব হোসেন আরও বলেন, এ নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ হবে এবং আগামী ৫ আগস্ট সরকারি উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে নতুন করে নির্মিত জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের এই বেদীতেই পুষ্পার্ঘ অর্পণ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন স ম ত স তম ভ ন র ম ণ ন র ম ণ কর গণপ র ত আওয় ম আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকের ওপর হামলা, জবি ছাত্রদল নেতা মাহমুদুলের পদ স্থগিত
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) তিন নেতার ওপর হামলার ঘটনায় জবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসানের সাংগঠনিক পদ এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহসভাপতি মর্যাদার) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসানের সাংগঠনিক পদ আগামী ১ মাসের জন্য স্থগিত করা হলো।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদের গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে শাখা বাগছাস সভাপতি, মুখ্য সংগঠক ও যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. ফয়সাল মুরাদ, ফেরদৌস হাসান এবং ফারুককে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে তাদের ওপরও হামলা ও মারধর করেন তারা। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।