আদালতে মেজাজ হারালেন হাজী সেলিম
Published: 26th, February 2025 GMT
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে আদালতে শুনানি শুরুর আগে আইনজীবীর ওপর বিরক্ত হয়ে মেজাজ হারিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন সকালে হাজী সেলিমসহ অন্য আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। ১০টা ৬ মিনিটে পুলিশি পাহারায় হেলমেট, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে হাজতখানা থেকে তাদের বের করা হয়। আদালতে তোলার পর হাজী সেলিমের হেলমেট খুলে দেয় পুলিশ। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি নিজের আইনজীবীর প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেন। মেজাজ হারিয়ে তিনি নানা ধরনের অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। মাঝে-মধ্যে হাতের আঙুল দিয়ে বিভিন্ন কিছু বোঝানোর চেষ্টা করেন। পরে তাকে যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তখন তার আইনজীবী প্রাণ নাথ কথা বলার জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করেন। অনুমতি পেলে আইনজীবী দুই পৃষ্ঠার প্রিন্ট করা কাগজ পড়তে দেন হাজী সেলিমকে। আইনজীবী তাকে বুঝিয়ে দেন। ১০টা ৩৮ মিনিটে ফের পুলিশি পাহারায় তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
হাজী সেলিমের আইনজীবী প্রাণ নাথ সাংবাদিকদের বলেছেন, “পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর-সংলগ্ন এলাকায় হাজী সেলিমের মালিকানাধীন মদিনা মেরিটাইমের নামে সাড়ে ১০ একর জমি আছে। এই জমি সরকার অধিগ্রহণ করে নেওয়ার খবর তাকে জানানো হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য আরো সাড়ে ১০ একর জমি কেনার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা হবে, এ তথ্যও তাকে কাগজে লিখে জানানো হয়েছে।”
হাজী সেলিম কেন বিরক্ত হলেন? এ প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী বলেন, “তিনি কারাগারে তেমন সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। তিনি কথা বলতে পারেন না। এমনকি তার কথা কেউ বুঝতে পারেন না। এসব কারণে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, আমাদের তো এখন কিছু করার নেই। যতটুকু পারছি, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তার সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি দেখছি।”
ঢাকা/মামুন/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।