পাইপলাইনে রান্নার গ্যাস আসছে কলকাতায়
Published: 26th, February 2025 GMT
কলকাতায় রান্নার এত দিন ধরে রান্নার কাজে সিলিন্ডারের গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৪ দশমিক ২ কেজি ওজনের প্রতিটি গ্যাস বোঝাই সিলিন্ডারের দাম ৮৩০ রুপি। তবে কলকাতাবাসী এখন পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস পাবেন। বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের জন্য পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মার্চে। অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহ শুরু হতে পারে।
ভারতের ইন্ডিয়ান অয়েল ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম—এ দুটি কোম্পানি রান্নার গ্যাস সরবরাহ করে আসছে কলকাতাসহ রাজ্যজুড়ে। ঢাকার মতো এই রাজ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা ছিল না। রাজ্যবাসীও বারবার দাবি তুলেছেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়িতে বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের। তাতে গ্যাসের দাম কম পড়বে এবং বাড়িতে বাড়িতে সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের ঝক্কি থাকবে না।
সেই লক্ষ্য নিয়ে এই রাজ্যে বাড়িতে বাড়িতে রান্নার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেয় বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি। কিন্তু বাড়িতে এই গ্যাস সরবরাহের জন্য মাটি খুঁড়ে গ্যাসলাইন বসানোতে কলকাতা পৌর করপোরেশন যে খরচ দেওয়ার কথা বলে, তাতে সায় দিচ্ছিল না গ্যাস কোম্পানি। তারা দাবি করেছিল, বাড়িতে গ্যাসলাইন বসানোর খরচ আরেকটু বাড়াতে হবে।
এ নিয়ে দেনদরবারের কারণে বছরখানেক আটকে থাকে কলকাতায় বাড়িতে বাড়িতে রান্নার গ্যাস সরবরাহের প্রকল্পটি।
অবশেষে সম্প্রতি সেই জট কেটে গেছে। ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে কলকাতা শহরে এই রান্নার গ্যাসের পাইপলাইন বসানো হবে ইএম বাইপাসের কালিকাপুর কানেকটর থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত। চার কিলোমিটার পথে পাইপ বসানোর কাজ চলবে। যদিও প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে কলকাতা পৌর করপোরেশনের সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার পথে পাইপলাইন বসানো হবে। সংস্থার সিইও অনুপম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পূজার আগেই প্রথম পর্যায়ের চার হাজার কিলোমিটার পাইপলাইন বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
প্রস্তাবিত এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এখানে পাইপলাইন বসাতে সময় লাগতে পারে। প্রতি মিটার মাটি কাটতে খরচ ৮৪৫ রুপি করে।
সংস্থার কর্মকর্তা অনুপম মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, হুগলির দু–তিনটি পৌর এলাকাসহ উত্তর চব্বিশ পরগনার একাধিক পৌর এলাকায় পূজার পর পাইপলাইনে রান্নার গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়ে যাবে।’ তিনি এ কথাও বলেছেন, সারা রাজ্যে গ্যাসলাইন বসাতে যে খরচ শুধু কলকাতার বাইরে সেই খরচ ৫ গুণ বেশি হবে কলকাতায়। তাই বেশি খরচেই কালিকাপুর থেকে যাদবপুর থানা পর্যন্ত পাইপলাইন বসাবে বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ন ন র গ য স সরবর হ গ য স সরবর হ র কলক ত য়
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।