ভোটে শুরু বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া
Published: 27th, February 2025 GMT
তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার শুদ্ধচর্চা নিশ্চিতের বিষয়টি দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনেই আভাস দিচ্ছে বিএনপি। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচনে শুরু হয়েছে সেই প্রক্রিয়া।
মঙ্গলবার বিকেলে মোস্তফাপুর বিএনপির সম্মেলন শেষে তৃণমূল কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে। ইউনিয়নে সভাপতি ইমরান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মজনু মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রুহেল আহমেদ নির্বাচিত হয়েছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, মৌলভীবাজারে বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর ক্ষেত্রে কমিটি গঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জেলা বিএনপি। সম্প্রতি তৃণমূলে দলীয় কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করছে সদর উপজেলা বিএনপি। সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে সরাসরি কাউন্সিলরদের ভোটে আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে।
মোস্তফাপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আজিজুল আলম কোরেশী মান্নুর সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি এম নাসের রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সুনীল কুমার দাশ, ফখরুল ইসলাম, বকসি মিসবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু প্রমুখ।
অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আয়াছ আহমদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শ্যামলী সূত্রধর, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ ফয়সল আহমদ, তোফায়েল আহমদ তুয়েল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ মোহিত, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান ও মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জনি আহমদ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’