নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় বড় ভাইয়ের কোদালের আঘাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আমিন উল্যাহ (৬০)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের পূর্ব কাবিলপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে সেনবাগ থানার পুলিশ নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত বড় ভাই মো.

মোতালেব (৬৬) পলাতক থাকায় তাঁকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে লাউগাছের গোড়ায় মাটি কেটে দেওয়া নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া বাধে। যার একপর্যায়ে বড় ভাই মোতাবেল তাঁর হাতে থাকা কোদাল দিয়ে ছোট ভাই আমিন উল্যাহর বুকে আঘাত করেন। এতে তিনি ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারান। পরে আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানায়, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল থেকে আমিন উল্যাহর লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে বেলা দুইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তির বুকে আঘাতের দাগ দেখা গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সেনবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হযরত আলী প্রথম আলোকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, লাউগাছের গোড়ায় মাটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যকার ঝগড়ার সময় বড় ভাই হাতে থাকা কোদাল দিয়ে ছোট ভাইয়ের বুকে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হযরত আলী জানান, ঘটনাটি সকালের দিকে ঘটলেও বেলা একটার দিকে পুলিশ জানতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে নিহত ব্যক্তির সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করে। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত বড় ভাই পালিয়ে যাওয়ায় তাঁকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় থানায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বড় ভ ই

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত আরও ৩, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ