গাজায় যুদ্ধবিরতি বিষয়ে ভালোই আলোচনা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ কথা বলেন। তবে এ ব্যাপারে তিনি খুব একটা বিস্তারিত বলেননি।

গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। এর আওতায় গাজায় হামাসের কাছে আটক থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি এবং ইসরায়েলের কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

দুই দিনের মধ্যে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি ফলপ্রসূ হবে কি না।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ওই যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দেখছি কী হয়। কেউ আসলে জানে না, তবে আমরা দেখছি কী হয়। আমাদের মধ্যে ভালোই আলোচনা চলছে।’

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দায়ী করেছে।
গতকাল স্টারমার দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রতি তাঁর সমর্থনের কথা পুনচ্চারিত করেছেন। দ্বিরাষ্ট্র সমাধান হলো ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

ট্রাম্প গাজা দখলের যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্টারমারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি যে এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দুই রাষ্ট্র সমাধানই একমাত্র পথ।’

ট্রাম্পের গাজা দখলের ওই প্রস্তাবকে জাতিগত নিধন উল্লেখ করেছে বিশ্ব সম্প্রদায়।
ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘ ইসরায়েলি জিম্মি ও মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের উভয়ের চিত্রকে দুঃখজনক বলে বর্ণনা করেছে, তারা বলেছে যে তারা যে ভয়ানক অবস্থার মধ্যে ছিল, তা প্রতিফলিত করে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ