প্রথমবারের মতো প্রশাসনের উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন, অনেকে খাবার পাননি
Published: 2nd, March 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু তবে মহতী এ উদ্যোগে আয়োজনের তুলনায় রোজাদার শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেকটা বাধ্য হয়ে মসজিদের মাইকে এক প্যাকেট খাবার দুজনকে ভাগ করে খাওয়ার অনুরোধ জানায় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই ইফতার না পেয়ে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ সময়মতো ইফতারও করতে পারেননি।
আয়োজকেরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে শিক্ষার্থীদের ইফতার বাবদ প্রায় ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ প্রথম রোজায় প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য বিরিয়ানি রান্না করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল খেজুর ও সালাদ। এমন আয়োজনের মধ্য দিয়েই ইফতার অনুষ্ঠান শেষ হয়।
গত শুক্রবার ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামের ফেসবুক গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী ইফতারের আয়োজনের ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে ব্যাপক প্রশংসা পায়। আজ রোববার রোজার প্রথম দিনে দুপুর গড়াতেই শুরু হয় রান্নার আয়োজন। ইফতার আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কাজ করেন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। বিকেল হতেই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ইফতারে অংশ নিতে কেন্দ্রীয় মসজিদে ভিড় করেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ছিলেন নারী শিক্ষার্থীরা। তাঁদের জন্য শামিয়ানা দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করে আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পরই মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। ইফতারের আগমুহূর্তেই মসজিদ প্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ হয়ে যায়। মসজিদে জায়গা না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী সামনের আমবাগানে সারিবদ্ধভাবে বসে পড়েন। এ সময় খাবার সংকটের কারণে সব শিক্ষার্থীর মাঝে খাবার বণ্টন করা সম্ভব হয়নি। অনেকে খাবার নিতে শামিয়ানার নিচে এসে ধাক্কাধাক্কি করেন। একপর্যায়ে খাবার শেষ হয়ে গেলে অনেক শিক্ষার্থী খালি হাতে ফিরে যান।
সন্ধ্যার পর ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামের ফেসবুক গ্রুপে মো.
‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামের আরেকটি গ্রুপে সাথী নামের এক আইডি থেকে বলা হয়, ‘হল থেকে এক বোতল পানি নিয়ে গেছিলাম। দুই বান্ধবী সেটা খেয়ে ইফতার করে আসলাম। আলহামদুলিল্লাহ।’
আরিফ মাহমুদ নামের এক শিক্ষার্থী কমেন্টে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। অসাধারণ, সুন্দর উদ্যোগ। ধন্যবাদ আমাদের রাবি প্রশাসনকে। ইনশা আল্লাহ এমন আয়োজন অব্যাহত থাকুক। তবে আর একটু সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।’
আয়োজনের ব্যাপারে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ রকম আয়োজন আগে কখনো করা হয়নি। এটি করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমাদের অনুমানের চেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী আসায় অনেকে খাবার পাননি। এ জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি, ভবিষ্যতে আর এমন হবে না। এসব বিষয় মাথায় নিয়ে আমরা কাজ করব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইফত র র র জন য মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।
বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।
সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।
আরো পড়ুন:
যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ
পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার
কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।
এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।
এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।
ঢাকা/আমিনুল