মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ দিন দুপুর ৩টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নির্বাহী কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাভারে দলের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন এবং সকাল ১০টায় রায়েরবাজারে ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জেয়ারত করবেন তারা। আজ সোমবার এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির নেতৃবৃন্দ মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতৃবৃন্দ রাজধানীর রায়েরবাজারে সকাল ১০টায় চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত করবেন। দুটি কর্মসূচিতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক জনাব মো.

নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সদস্যবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর ২১৭ সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। চারটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে সাংগঠনিক পরিধি বিস্তৃতি ঘটাবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির একাধিক নেতা।

দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দীন সিফাত সমকালকে বলেন, আমাদের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির চারটি প্রধান কাজ হবে- সংগঠনের গঠনতন্ত্র এবং ইশতেহার প্রণয়নের কাজ করা। এর পাশাপাশি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা এবং সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তার কার্যক্রম পরিচালনা করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প গঠন ক এনস প সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য: মাহমুদুর রহমান মান্না

‘এরা সংস্কারের কথা বলে, কিন্তু বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। অর্থনীতিতে নেই, পুলিশের কোনো সংস্কার হচ্ছে না, শিক্ষায় নেই, কোথাও নেই। তাহলে এই সংস্কারটা কী?’ এ প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলে মান্না বলেছেন, ‘টাস্কফোর্স আছে, কিন্তু তার কোনো মূল্য নেই। পুলিশ বা প্রশাসনে কী সংস্কার হচ্ছে, সেটাও জানানো হচ্ছে না। কোনো কমিটি পর্যন্ত নেই। তাই প্রশ্ন জাগে, এই কথিত সংস্কার কাদের জন্য, কিসের জন্য?’

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন মান্না। ‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কল্যাণ রাষ্ট্রের ভাবনায় বাজেট ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

আলোচনায় বাজেট নিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বৈষম্য নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। বাজেট না হয়ে এটা রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে এমন কোনো কথা হয়েছে কি না, যেটা বাইরে বলা যাবে না, সেই প্রশ্ন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি। এরপরও নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মান্না।

নির্বাচন ছাড়া যাওয়ার কোনো পথ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি হঠাৎ কিছু ঘটিয়ে দেয়, সেটা বলা যায় না। কিন্তু আমরা তো জানি, সেই ঘটনা ঘটলেও নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নাই। সেই অর্থে মাইনাস নির্বাচন-এমন ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। নির্বাচন ইস্যুতে বরফ জমে ছিল, এখন সেটি গলতে শুরু করেছে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ওই তারিখে নির্বাচন হতে পারবে না। সরকার বলেছিল একমাত্র ওই দল বিরোধিতা করছে। এখন যেভাবে কথা হচ্ছে, মনে হচ্ছে বরফ গলছে। আমি এটা ইতিবাচক মনে করি। আমি গণতন্ত্র চাই, সেই জন্যই নির্বাচনের ওপর এত জোর দিচ্ছি।’

পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ঘাটতি দেখছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর যেখানেই যাই কেউ তো আমাদের ফেরত দিচ্ছে না। সবাই আমাদের ডাকছে আসো, তোমাদের কী লাগে সংস্কারের জন্য, কী করতে হবে, দেশটা বদলাবার জন্য কী করতে হবে, একদম সর্বোচ্চ জায়গা থেকে বলা হয়েছে। অথচ দেখলেন এই পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনবার জন্য ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী (যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার) কী আচরণ করলেন। উনি ঠিক করেছেন নাকি আমরা কোনো কথাবার্তা না বলে গেছি?’

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাসার হাওলাদার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ