শুরুতে বলে রাখা ভালো, এই নিবন্ধ ধূমপান উৎসাহিত করার জন্য নয়। ধূমপান অবশ্যই স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এই লেখা পিতৃতন্ত্রের ঝাণ্ডাধারী মোরাল পুলিশের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা যেভাবে আসল অপরাধীদের ধরার কথা না বলে আইনের ভুলভাল ব্যাখ্যা শেখালেন, সেটি নিয়ে।  

ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর– নারী-পুরুষ সবার স্বাস্থ্যের জন্যই। কিন্তু এই সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণের পরও অগণিত মানুষ ধূমপান করে। কারণ এটি একটি বদঅভ্যাস। যারা নিয়মিত ধূমপান করে, তারা সহজে ছাড়তে পারে না। কিন্তু আমাদের দেশে পিতৃতন্ত্র আপত্তি তোলে কেবল নারীর ধূমপানের বেলায়। ছেলেরা প্রকাশ্যে ধূমপান করলে এই পিতৃতন্ত্রের তেমন বিকার হয় না। বিকার তুঙ্গে ওঠে, যদি ধূমপানকারী নারী হয়। পিতৃতন্ত্র তখন অবধারিতভাবে বক্তব্য হাজির করে– ‘মেয়েটা খারাপ’। এভাবে ‘স্লাট শেমিং’ এবং ‘মোরাল পুলিশিং’ শুরু করে দেয় আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ।
এখানে লক্ষণীয়, ধূমপানের স্বাস্থ্যগত দিক নিয়ে এরা খুব একটা চিন্তিত নয়। নারী কিংবা পুরুষ কারও জন্যই নয়। তাদের আসল সমস্যা হলো নারী ধূমপান করায়। অথচ দেশের কোনো আইনে কোথাও কি লেখা আছে যে, নারীরা ধূমপান করতে পারবে না? 

সম্প্রতি লালমাটিয়ায় দুই নারী এক টং দোকানে বসে চা ও সিগারেট খাচ্ছিলেন। লাখ লাখ ছেলে টং দোকানে বসে তা-ই করে। তখন কেউ কোনো সমস্যা বোধ করে না। অথচ সেখানে ‘মব’ খাড়া করে ওই দুই নারীর গায়ে হাত তোলা হলো। তাদের ‘বেশ্যা’ বলা হলো। প্রতিবাদ করায় তাদের যৌন হয়রানি করা হলো, মারধর করা হলো। এমনকি জামাকাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করা হলো। এ সবই গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ। কিন্তু এই ফৌজদারি অপরাধ করার জন্য অপরাধীদের ধরা হলো না।
আমরা দেখলাম, নারীদের গায়ে হাত তুলে, তাদের যৌন নিপীড়ন করে ফৌজদারি অপরাধ করল যারা, তাদের গ্রেপ্তারের জন্য কোনো উদ্যোগই নেওয়া হলো না। উল্টো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রকারান্তরে সেই সব অপরাধীর পক্ষে সাফাই গেয়ে আমাদের আইনের ভুলভাল ব্যাখ্যা দিলেন। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বললেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ। তাই সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান না করে (প্রথম আলো)।’ 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে মনে হতেই পারে– ঠিকই তো। আইনে আছে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে জরিমানা! বাস্তবে ২০০৫ সালে প্রণীত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জরিমানা ছিল ৫০ টাকা। এটি ২০১৩ সালে সংশোধিত হলে জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করা হয়। ওই আইনের ২(চ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘পাবলিক প্লেস’ অর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আধা সরকারি অফিস, স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও বেসরকারি অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর ভবন, সমুদ্রবন্দর ভবন, নৌবন্দর ভবন, রেলওয়ে স্টেশন ভবন, বাস টার্মিনাল ভবন, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণি ভবন, চতুর্দিকে দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহণের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সারি, জনসাধারণ কর্তৃক সম্মিলিতভাবে ব্যবহার্য অন্য কোনো স্থান অথবা সরকার বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, সময় সময় ঘোষিত অন্য যে কোনো বা সকল স্থান।’
এটা পরিষ্কার– ওই দুই তরুণী যে টং দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন এবং ধূমপান করছিলেন, সেটা ‘পাবলিক প্লেস’ নয়। ফলে তারা কোনোভাবেই কোনো আইন ভাঙছিলেন না। তাহলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোন যুক্তিতে পাবলিক প্লেসের দোহাই পাড়লেন– আমরা জানতে চাই।

যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নিই– টং দোকানটি ‘পাবলিক প্লেস’, তাহলেও সে অপরাধের বিচারের ভার কার? আলোচ্য আইনের ১৪ (১) (খ) ধারায় বলা হয়েছে, বিচারের ভার ‘যে কোনো শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের’। শুধু তাই নয়; ‘কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোনো আদালত এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করিবে না।’ ফলে আইন অনুযায়ী কোনোভাবেই কোনো পথচারী বা ‘মব’ ধূমপানের বিচার করতে পারে না। পরিষ্কারভাবে লালমাটিয়ায় মবই আইন লঙ্ঘন করেছে। শুধু তাই নয়; আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াও অপরাধ। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শুধু ধূমপানবিষয়ক আইনে উল্লিখিত পাবলিক প্লেসের অপব্যাখ্যাই দেননি; যারা কিনা মব হামলা করল, তাদের বিষয়েও নীরব থেকেছেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছিলেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেউ সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করলে আমরা তাকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব’ (বিডিনিউজ)। লালমাটিয়ার অঘটনা কি শাস্তির আওতায় আনার নমুনা? নারীদের ওপর বিনা অপরাধে হামলা করল যারা; আইন হাতে তুলে নিল যারা; তাদের গ্রেপ্তার না করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্টো ভিকটিমদের বকে দিচ্ছেন আইনের ভুলভাল ব্যাখ্যা হাজির করে! 

ড.

মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পরে এটাও বলেছিলেন– জনগণ না চাইলে তারা থাকবেন না। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে এই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি প্রায় প্রতিদিনই উঠছে। ফলে মোরাল পুলিশিং করা মবের সাফাই না গেয়ে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির জন্য ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিত নৈতিক কারণেই পদত্যাগ করা। 

মাহতাব উদ্দীন আহমেদ: গবেষক, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট; সদস্য, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি
mahtabjuniv@gmail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল ন প রসঙ গ প বল ক প ল স র র জন য আম দ র আইন র অপর ধ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, “জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান অংশীদার ও পরীক্ষিত বন্ধু। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে আসছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে।”

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাঁর অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Saida Shinichi-এর সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কৃষি খাতে সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা, ২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামাতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’তে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ, কৃষি বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা, নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ সংস্কার, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যু সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “জাপান বাংলাদেশের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।” 

উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০২৭ সালে জাপানের ইয়োকোহামা'তে ‘আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপো’ অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক এ এক্সপো'তে বাংলাদেশকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ।”

উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আর জাপান কৃষি খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারী দেশ। তাই জাপান বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিশেষ করে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, ফসলের পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও সংরক্ষণ, জলবায়ু ও স্মার্ট কৃষি, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা করতে পারে।” 

তিনি বলেন, “জাপান বাংলাদেশের কৃষি পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক হিমাগার স্থাপন ও কুলিং ভ্যান সরবরাহ করে সহযোগিতা করতে পারে। তাছাড়া জাপান আমাদেরকে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।” 

তিনি এসময় রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে আধুনিক কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “কৃষি বিষয়ক দু'দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সর্বশেষ সভা ২০২৪ সালের মে মাসে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্রুত এ সংক্রান্ত পরবর্তী সভা আয়োজন করা দরকার।” 

উপদেষ্টা জানান, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পরবর্তী সভা এ বছরের অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সভা আয়োজনের বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমানে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। তবে এটির আরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করে যাচ্ছি।” 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কোনো সুযোগ নেই, বরং দিন দিন এটির উন্নতি ঘটবে বলে আমি আশা করছি।”

পুলিশের সামর্থ্য ও গ্রহণযোগ্যতা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমানে পুলিশের সামর্থ্য, মনোবল ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক বেশি বেড়েছে।” 

তিনি এসময় আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জাপানের সহায়তা কামনা করেন। তাছাড়া তিনি নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডকে পেট্রোল ভেসেল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগিতা এবং অধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে জাপানে উন্নত প্রশিক্ষণে প্রেরণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। 

রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ইন্টারপোল নির্বাচনে নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে জাপানের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা এ পদে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাপানকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাপান দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • চলতি বছর বিশ্বে মন্দার ঝুঁকি বেড়েছে, জরিপে অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা
  • ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
  • পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা ব
  • রাখাইনের জন্য করিডোরে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি কতটুকু
  • সাবেক আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবার বাড়ল