বাড়ির ট্যাপ থেকে বের হচ্ছিল রক্তযুক্ত পানি, ট্যাংকে পাওয়া গেল গলিত লাশ
Published: 5th, March 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানির ট্যাংক থেকে তালেব মিয়া (২৮) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ৷ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শহরের কলেজপাড়ায় ধন মিয়ার বাড়ির পানির ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত তালেব জেলা শহরের কান্দিপাড়ার মাইলহাটির মৃত রাজা মিয়ার ছেলে। গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
কলেজপাড়ায় ধন মিয়ার একতলার বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংক আছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে বাড়ির এক ভাড়াটে ট্যাপ থেকে রক্তসহ দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হতে দেখেন। তিনি বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানান। পরে এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে তাঁরা পানির ট্যাংকের ঢাকনা খুলে ভেতরে অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ পানির ট্যাংক কেটে ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করে।
কলেজপাড়ার বাসিন্দা মো.
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, লাশের মুখ থেঁতলে গেছে, মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশে পচনের গন্ধ ধরেছে। কয়েক দিন আগে লাশটি পানির ট্যাংকের ভেতরে ফেলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি মোজাফর হোসেন আরও বলেন, এটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দল আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করেছে। প্রথম রমজানের ইফতারের পর থেকে তালেব নিখোঁজ ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।