দেশী কারিগরদের হাতে তৈরি গহনা নিয়ে কাজ করছেন ‘আট কুঠুরি নয় দরজা’-এর কর্ণধার হাফসা মোসলেম। কি নেই তার কালেকশনে? গোল্ড প্লেটেড, সিলভার প্লেটেড, তামা, পিতলের গহনা সব পাওয়া যায় ‘আট কুঠুরি নয় দরজা’তে। এটি একটি অনলাইন উদ্যোগ।
হাফসা মোসলেম রাইজিংবিডির পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘গত কয় এক মাসের অভিজ্ঞতা থেকে আটকুঠুরি নয় দরজা এবারের ঈদে বাজেট কমিয়ে তামা পিতলের গহনা নিয়ে বেশী কাজ করছে। আর এমনিতেও আটকুঠুরি নয় দরজার সিগনেচার গহনা তামা-পিতলই। তবে বাজেট কমিয়ে ছোট নেকলেস সেট এবার বেশী করা হয়েছে। পিতলের তৈরী নেকলেস এর পাশাপাশি বালা,আংটি ,নুপুরও থাকছে।এছাড়ার কালো ব্রাশের উপর ইলেকট্রোপ্লেটিং করা নেকলেস আমার ক্লায়েন্টদের বেশি পছন্দ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের যেহেতু দেশী পিতলের গহনা বেশী তৈরি হয় আমার কাছে তাই মনে হয় গোল্ড প্লেডেট/সিলভার প্লেডেট এর চাইতে আমাদের কাছে আমাদের অডিয়েন্স পিতলের গহনাই বেশী চাচ্ছে,আসলে প্রতিটা ব্যবসায়ীর অডিয়েন্স আলাদা হয় আমার অডিয়েন্স বা ক্লায়েন্ট যেটাই নলেন না কেন তারা পিতলের গহনাটাই বেশি পছন্দ করেন।’’
আরো পড়ুন:
নওশাবার ঈদ কালেকশন
পোশাকে থাকুক আরাম আর উৎসবের আমেজ
হাফসা মোসলেম নিজে গহনার ডিজাইন করেন। মনের মাধুরি মিশিয়ে এক একটি ডিজাইন ফুটিয়ে তোলেন তিনি। ঈদের গয়নায় উৎসবের আমেজের দিকটি যেমন খেয়াল রেখেছেন তেমনি এই ডিজাইনার জানেন, ঈদ মানে বিয়ের মৌসুমও। তাই ‘আট কুঠুরি নয় দরজা’র কালেকশনের বিশেষ স্থান পেয়েছে বিয়ের গহনাও।
হাফসা মোসলেম বলেন, ‘‘ঈদের পর পরই আমাদের দেশে একটা বিয়ের মৌসুম চলে আসে তখন গোল্ড প্লেডেট গহনাটাই ক্লায়েন্ট বেশি পছন্দ করেন। এই দিকটি বিবেচনা করে বাজের ফ্রেন্ডলি গোল্ড প্লেডেট গহনা রাখা হয়েছে এবারের কালেকশনে।’’
দরদাম: আট কুঠুরির নয় দরজার নেকলেসের দরদাম শুরু হয় ৬৫০ টাকা থেকে।
রাইজিংবিডি জানতে চেয়েছিল এই ডিজাইনারের নিজের পছন্দের গয়না সম্পর্কে। হাফসা মোসলেম বললেন, তিনি সব সময়ই অল্প সাজগোজ করতে পছন্দ করেন। কারণ তার নিজের কাছে মনে হয় তাকে খুব বেশি ভারী সাজগোজে মানায় না! তার পছন্দ হালকা সাজগোজ এর সাথে হালকা গহনা। গহনার মধ্যে সবচেয়ে বেশী পছন্দ ফিঙ্গার রিং।
হাফসা মোসলেমের নাকি মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয়, নিজের কালেকশনের সব ফিঙ্গার রিং নিজের জন্য রেখে দিতে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ প শ ক ঈদ র ক ল কশন আট ক ঠ র ন কল স আম দ র ড জ ইন পছন দ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬০ দিন পর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা, উৎসবের আমেজ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ ১৬০ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইছে উৎসবের আমেজ।
সকালে কুয়েট ক্যাম্পাসে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস। ছাতা মাথায় দল বেঁধে ছুটছেন ক্লাসরুমের দিকে। কখনো এক ছাতার নিচে দু-তিনজন। কারও সঙ্গে অভিভাবকও এসেছেন। সকাল নয়টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ক্লাসে যোগ দেন। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে শ্রেণি কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করেন।
ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দীপ্ত বলেন, ‘আমাদের প্রায় এক সেমিস্টার নষ্ট হয়ে গেছে। এই সময়টা খুব অস্বস্তিতে কেটেছে। ক্ষতি যা হওয়ার হয়েছে, তবে এখন আবার ক্লাস শুরু হওয়াটা ইতিবাচক দিক। আমরা আশাবাদী।’ একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আম্মান বলেন, ‘অনেক দিন জীবনটা থেমে ছিল। আজকের দিনটা বিশেষ মনে হচ্ছে। ঠিক যেন স্কুলজীবনের প্রথম দিনের মতো। সব হতাশা কাটিয়ে আমরা অনেকটা নতুন করে শুরু করছি।’
হুমায়ুন কবির নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ে। পাঁচ মাস ধরে ক্লাস বন্ধ থাকায় ও মানসিকভাবে খুব চাপের মধ্যে ছিল। একসময় অসুস্থও হয়ে পড়ে। কুয়েটে এমন পরিস্থিতি আগে দেখিনি। কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে হয়তো আগেই খুলে যেত। তারপরও এখন অন্তত খুলেছে, এটা বড় স্বস্তি।’
কুয়েটের ছাত্র পরিচালক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আজ থেকে কুয়েটে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো সব শিক্ষার্থী আসেননি। যাঁদের কেবল ক্লাস রয়েছে, তাঁরা অংশ নিচ্ছেন। যাঁদের পরীক্ষা ছিল, তাঁরা প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় চেয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন হবে ১৪ আগস্ট, ক্লাস শুরু ১৭ আগস্ট।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ওই রাতেই তৎকালীন উপাচার্য ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৬ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয়। ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক হজরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার দাবিতে ৪ মে থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। এরপর কোনো শিক্ষকই ক্লাসে ফেরেননি। শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার মুখে হজরত আলী দায়িত্ব পালন করতে না পেরে ২২ মে পদত্যাগ করেন।
এরপর ১০ জুন নতুন উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী। পরদিন শুক্রবার তিনি খুলনায় এসে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় আন্দোলন কর্মসূচি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ক্লাস শুরুর নোটিশ জারি করা হয়।