ফরিদপুরের সেই সেতুতে বন্ধ হয়নি হয়রানি
Published: 7th, March 2025 GMT
ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার ও নিউমার্কেটের সংযোগ স্থাপনকারী কুমার নদের বেইলি সেতুতে হয়রানি বন্ধ হয়নি। সরু সেতুর দু’পাশজুড়ে হকারের উৎপাত চলছেই। সেই সঙ্গে ভিড়ের সুযোগে প্রতিনিয়ত ঘটছে যৌন হয়রানি ও পকেটমারের ঘটনা। এতে অতিষ্ঠ শহরবাসীর দাবি, দ্রুত সেখানে একটি পাকা ও প্রশস্ত স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।
১৯৩৫ সালে নির্মিত এই সেতু ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় ধসে যায়। এর পর অস্থায়ীভাবে বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়, যা ৩৭ বছর ধরে চলছে। প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার মানুষ কুমার নদ পারাপার হয়। কিন্তু অবৈধভাবে ফুটপাত দখল, অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও যানজটের কারণে এটি এখন স্থানীয়দের জন্য বড় সমস্যা। যানবাহন না চললেও মধ্য ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর বাজারে আসা-যাওয়ার প্রধান পথ এই বেইলি সেতু দুর্ভোগের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, যানবাহনে শহরের প্রধান কাঁচামালের বাজার হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার থেকে নিউমার্কেট আসা-যাওয়া করতে আলীমুজ্জামান সেতু হয়ে আধা কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। এতে সময় ও টাকা দুটিই ব্যয় হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, শরীয়তুল্লাহ বাজার প্রান্তে পাশের মাংসের বাজারের বর্জ্য সেতুটির নিচে স্তূপ করে রাখা। রোজাদার পথচারীরা দুপুরে নাকেমুখে কাপড় চেপে পচা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। সেতুর ওপর থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার সকালে এক দফা হকার উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার পরপরই আবার নানা কৌশলে সেতু পায়ে চলার সামান্য পথটুকু চলে যায় হকারদের দখলে। রেলিংয়ের বাইরে বসে ভেতরে মালপত্র রেখে ফল, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন তারা।
ব্যবসায়ী বজলুর রশীদ বলেন, ফরিদপুরের প্রাচীন বেইলি সেতুটি কিন্তু এখন শুধুই সমস্যার কেন্দ্র। সরু হওয়ায় সেতুতে যানবাহন চলাচল করে না। আমরা বাইপাস হিসেবে এটি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছি। এখানে একটি নতুন স্থায়ী সেতু হলে মানুষের হয়রানি বন্ধ হবে। অপরাধীরাও ভিড়ের সুযোগ নিতে পারবে না।
পথচারী মুন্নি সুলতানা বলেন, বেইলি সেতুতে চলাচল করতে গিয়ে নারীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা চাই, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।
ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার জানান, বেইলি সেতুটি সংস্কারে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে। অবৈধ ফুটপাত দখল উচ্ছেদেরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া, পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হয়র ন
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন
তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের।
দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত।
আরো পড়ুন:
রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন
টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়
প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।
তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।
গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে।
সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়।
ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে।
২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ঢাকা/লিপি