স্থানীয় সরকার কাঠামোকে কার্যকর না করলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে না। জাতীয় রাজনীতির অস্থিরতা, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রবণতা কমিয়ে আনতে হলে স্থানীয় সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে এসে অনেকটাই স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত হতে হবে।

কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে দূরত্ব বাড়াতে পারলে জাতীয় রাজনীতির চরিত্রও পরিবর্তিত হবে। তখন তা উন্নয়ননির্ভর থেকে নীতিনির্ভর হয়ে উঠবে। সেখানে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিরা জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব ও হস্তক্ষেপ কমে আসবে।

একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার থাকলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রবণতা কমে যাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ যত কমানো যাবে, স্থানীয় সরকার ততই নিজস্ব ক্ষমতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে পারবে। তখন স্থানীয় সরকারের বাজেট, আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার কারণে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের সংঘাত কমবে।

স্থানীয় সরকার যদি প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে জাতীয় রাজনীতি অলাভজনক একটি ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হবে। আর তেমন হলে ক্ষমতা দখলের লড়াইও কমে আসবে। ক্ষমতা হস্তান্তর হবে অনেকটাই শান্তিপূর্ণভাবে। তাই কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রবণতার অবসান করে একটি কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা জরুরি।

সম্প্রতি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গঠিত ছয়টি কমিশন সরকারের কাছে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বাংলাদেশকে চারটি প্রদেশে ভাগ করার যে প্রস্তাব করেছে, বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো এবং আঞ্চলিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে প্রাদেশিক বিভাজন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি শাসনব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নষ্ট করে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর স্থানীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই হতে পারে প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনের একটি কার্যকর উপায়। আর এর জন্য প্রয়োজন এক কাঠামোগত প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশের সংবিধানে স্থানীয় সরকারকে ‘স্থানীয় শাসন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা কার্যকরভাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। একে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় সরকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্ব থেকে এর স্বাধীনতা। এ কাঠামোকে কার্যকর করার জন্য তিন স্তরের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন—ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ।

একটি কার্যকর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তার কেন্দ্রস্থল হতে হবে জেলা পরিষদ, যা জেলা সরকারের আদলে পরিচালিত হবে। প্রতিটি পরিষদের সদস্যদের সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে এবং পরিষদের সভাপতি ও সহসভাপতিদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই মনোনীত করা উচিত। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে একটি মনিটরিং কাউন্সিল গঠন করতে হবে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।

ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি হওয়া স্থানীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রয়োজনের চেয়ে সরকারের প্রয়োজনকে বেশি গুরুত্ব দিত। তাই স্থানীয় পর্যায়ে প্রকৃত জনকল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ বাস্তবতায় স্থানীয় সরকারকে স্বশাসিত ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল করে তোলা দরকার, যাতে এটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্থানীয় সরকারকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি জনগণের জবাবদিহির নিশ্চয়তা বিধানের জন্য প্রয়োজনে রিকল বা প্রত্যাহার পদ্ধতি চালু করা দরকার। গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে ন্যূনতম ৬৫ শতাংশ ভোটারের আবেদন থাকলেই কেবল কোনো জনপ্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

স্থানীয় সরকার যেন জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে পারে, সে জন্য প্রশাসনিক সেবার বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। যে সেবা ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া সম্ভব, তার জন্য যেন উপজেলায় যেতে না হয় এবং যে সেবা উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া সম্ভব, তার জন্য যেন জেলা পর্যায়ে যেতে না হয়। সেবার ক্ষেত্রে জনগণের চাহিদার ভিত্তিতেই স্থানীয় সরকারের কর্মপরিধি নির্ধারণ করতে হবে।

এ ছাড়া পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়নের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা যাতে স্বচ্ছ হয়, সে জন্য পৃথক তহবিল গঠন করতে হবে এবং এটি স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা অর্থ ও রাষ্ট্রীয় বাজেটের ওপর নির্ভর করবে। বাজেট ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মনিটরিং কাউন্সিলের রিপোর্ট পাওয়ার পরই পরবর্তী বাজেট অনুমোদন করা উচিত।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশের ফলে স্থানীয় সরকারকেও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। জনগণ যাতে সহজেই সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে এবং সরকারি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে, সে জন্য স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে আধুনিকায়ন করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের সঙ্গে বৈদেশিক শ্রমবাজারের কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজারে যাঁরা কাজ করতে যান, তাঁদের বড় অংশই গ্রামীণ অঞ্চল থেকে আসে। স্থানীয় সরকারকে তাই প্রতিটি অঞ্চলের কর্মসংস্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি নিয়োগদাতাদের স্থানীয় পর্যায়ে সংযুক্ত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে সরকারের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে দেশের সব স্তরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ও প্রতীক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। এর মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে দলীয় স্বার্থের পরিবর্তে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে।

এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যদের স্থানীয় সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা প্রশাসনিক কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ রাখা যাবে না। তাদের ভূমিকা কেবল জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়ন এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।

স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হওয়া উচিত, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনের পদ্ধতিতে। সরাসরি জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরিবর্তে পরিষদের সদস্যদের রোটেশন বা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হলে স্থানীয় পর্যায়ে একনায়কতন্ত্রের ঝুঁকি হ্রাস পাবে।

স্থানীয় সরকারকে স্বশাসিত ও জনমুখী করতে হলে তার প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে এবং তাকে কোনো সরকারি দপ্তরের অধীনস্থ না রেখে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত করার নীতি গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান করা, কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ করা নয়।

স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ করার জন্য প্রতিটি পরিষদের অধিবেশনে নাগরিকদের উপস্থিত থাকার সুযোগ এবং প্রশ্ন করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে এবং তাঁদের সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার শুধু প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের উপায় নয়। এটি হলো গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ। এখানে ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে যাওয়ার প্রয়াস শুরু হবে এবং জাতীয় রাজনীতির কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা রুদ্ধ হবে বলে আশা করা যায়। একটি শক্তিশালী, স্বশাসিত ও কার্যকর স্থানীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেলে তা জাতীয় রাজনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে আনবে, প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করবে।

স্থানীয় সরকার যদি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তবে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে এবং জাতীয় রাজনীতি শুধু ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ না থেকে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে মনোযোগী হবে। স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত হলে দুর্নীতি কমবে এবং জনগণের করের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত হবে। তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী হলে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতা অনেকাংশেই কমে আসবে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন কমে আসবে এবং শহরকেন্দ্রিক চাপও হ্রাস পাবে। তাই স্থানীয় সরকারকে কার্যকর ও গণমুখী করা শুধু একটি নীতিই নয়, বরং এটি টেকসই উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য এক অনিবার্য শর্ত।

আলাউদ্দীন মোহাম্মদ যুগ্ম সদস্যসচিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র র স থ ন য় সরক র র র স থ ন য় সরক র জ ত য় র জন ত র স থ ন য় পর য য় ন শ চ ত করত য় সরক র র ক ন শ চ ত কর সরক র র প কর ত ত ব র র জন য ক র যকর ক জ করত ব যবস থ জনগণ র প রবণত জন য প উপজ ল ক ষমত গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।  

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।

তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।” 

মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”

ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে। 

বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত স্থগিতের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের
  • ট্রাম্প কানাডাকে ‘ভেঙে ফেলতে’ চেয়েছিলেন
  • পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
  • হামদর্দের গাজার জনগণের প্রতি মানবিক সহায়তা
  • প্রশাসক নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট, ইউনিয়ন পরিষদটিতে চার মাস ধরে সব সেবা বন্ধ
  • সংসদে সংরক্ষিত আসন, না তৃণমূল রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ?
  • স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে: