পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক সহকারী শিক্ষকের কাছে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সংক্রান্ত একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষক মো. বেনজির ইসলাম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ওই শিক্ষক উপজেলার ৯৩ নম্বর উত্তর পূর্ব বানিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। 

ছড়িয়ে পড়া অডিওতে শিক্ষক বেনজির ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম। কেমন আছেন? আগামী রোববার আপনার সঙ্গে একটু দেখা করতে চাইছিলাম।’ এর উত্তরে  শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা বেগম বলেন, ‘রোববার না সোমবার আসেন।’ এ সময় ওই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তো আসলে কিভাবে এইটা ম্যানেজ করব, আপনি যদি বলে দিতেন। কয় টাকা আর বেতন পাই। কয় টাকা হলে আপনার হয়? আমি তো সৎভাবে জীবনযাপন করি।’ এ সময় শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘১০ টাকা (১০ হাজার), আর ১ টাকাও কম হলেও হবে না। আর কাউকে বলা যাবে না।’ জবাবে বেনজির বলেন, ‘৪-৫ হাজার হলে হয় না? এই টাকা আমার জোগাড় করতে হবে।’ শিক্ষা কর্মকর্তা তখন বলেন, ‘কম হলে হবে না। আর কাউকে এই কথা বলা যাবে না।’ এ সময় তিনি ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরে টাকা দেওয়া কথা বলেন। সেই সঙ্গে কাউকে বিষয়টি না জানানোর শর্ত দেন। 

সহকারী শিক্ষক বেনজির ইসলামের ভাষ্য, তিনি ছুটিতে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষা কর্মকর্তা অনৈতিকভাবে ওই টাকা ঘুষ হিসেবে দাবি করেছিলেন। টাকা না দিলে তাঁর ক্ষতি করার হুমকি দেন। পরে শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দেন।

৯৩ নম্বর উত্তর পূর্ব বানিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.

জামিল হোসেন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। তবে আমার স্কুলের সহকারী শিক্ষক বেনজির ইসলামের বেশ কিছু অনিয়ম করেছেন। এ জন্য আমি তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার, টিও স্যার ও ডিপিও স্যারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’

অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. হেনায়ারা বেগমের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি দাবি করেন, অভিযোগটি মিথ্যা। 

পিরোজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তাফা কামাল বলেন, নাজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ক ষ কর মকর ত কর মকর ত উপজ ল সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ