অপরাধের ব্যাপকতার পেছনে পরাজিত শক্তি: ইসলামী আন্দোলন
Published: 11th, March 2025 GMT
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের ব্যাপকতার পেছনে পরাজিত রাজনৈতিক শক্তি দায়ী বলে দাবি করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমেদ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের যে ব্যাপকতা দেখা যাচ্ছে, তা পবিত্র রমজান মাসের স্বাভাবিক চরিত্র না বলে মনে করেন ইউনুস আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত অপরাধপ্রবণ নয় এবং রোজার মাসে ঐতিহাসিকভাবেই সমাজে ‘তাকওয়ার’ প্রভাব দেখা যায়। কিন্তু এখন যে অপরাধের ব্যাপকতা দেখা যাচ্ছে, তা দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরাজিত রাজনৈতিক শক্তির অপচেষ্টার অংশ।
পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করে গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চাইছে উল্লেখ করে ইউনুস আহমেদ বলেন, তারা অভ্যুত্থানকে দেশের জন্য অকল্যাণকর দেখাতে চাইছে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক ভূমিকা পালন করতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ ও সামাজিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন ইউনুস আহমেদ। ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, ধর্ষকের শাস্তির ব্যাপারে ধর্ম, বর্ণ, মতাদর্শনির্বিশেষে সবাই একমত। তিনি বলেন, তারপরও ধর্ষণের ইস্যু নিয়ে একদল নারী-পুরুষকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। মতাদর্শিক সংঘাত তৈরির অপচেষ্টা করা হয়। এতে সমাজে বিভক্তি তৈরি হয়। এটা না করে ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব এছহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, দপ্তর সম্পাদক লোকমান হোসাইন, হারুন অর রশিদ, নূরুল করীম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন স আহম দ র জন ত ক অপর ধ র পর জ ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।