বাংলাদেশে এখন রঙের বাজার কত বড়?

বাংলাদেশের রঙের বাজার প্রতিবছর ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূলত, দেশে ৮৫ শতাংশ রং ব্যবহৃত হয় ডেকোরেটিভ ও আর্কিটেকচারাল কাজে, বাকিটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও মেরিন পেইন্ট খাতে ব্যবহৃত হয়। সরকার সম্প্রতি সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করায় স্থানীয় শিল্পের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই শিল্প, যা অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে শিল্পকারখানা, জাহাজ নির্মাণ ও উডকোটিং খাতেও ব্যবহৃত হয়। গবেষণা বলছে, রং–সংক্রান্ত গাফিলতির কারণে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বছরে প্রায় ১ শতাংশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ ছাড়া এই খাতের প্রায় সব কাঁচামালই আমদানিনির্ভর, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রবৃদ্ধির গতিকে শ্লথ করছে।

বাংলাদেশের বাজারে আপনাদের অবস্থান জানতে চাই।

২৬৫ বছরের পুরোনো বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ এই দেশে স্বাধীনতার সময় থেকেই শিল্প খাত বিকাশে কাজ করছে। বর্তমানে বাজারের প্রায় ৫০ শতাংশ রঙের চাহিদা বার্জার পূরণ করছে। গত বছর বার্জার সরকারের কোষাগারে প্রায় ৭৬৮ কোটি টাকা কর প্রদান করেছে।

রং যেহেতু রাসায়নিক পদার্থ, সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত দিকটি কীভাবে দেখেন? 

বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা ১৯৯৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো টিনটিং সিস্টেম চালু করি, যার মাধ্যমে গ্রাহকেরা ৫ মিনিটে ৫ হাজার রঙের শেড দেখতে পারেন। এর সব পেইন্ট সিসামুক্ত এবং এতে পারদ বা লেডের মতো ক্ষতিকর উপাদান নেই। পরিবেশ রক্ষায় বার্জারের ‘ইকোকোট’, ‘ব্রেদ ইজি ভাইরাকেয়ার’ নামের বিশেষ পণ্য রয়েছে। ব্রেদ ইজি ভাইরাকেয়ার ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করতে পারে। ইকোকোট পরিবেশবান্ধব ও এপিএইচ প্রযুক্তির কারণে ৯০ শতাংশ বাতাসের দূষিত গ্যাস শোষণ করে। ডাম্পগার্ড দেয়ালের ডাম্প প্রতিরোধ করে ঘরের দেয়ালকে রক্ষা করে, এটি পানিরোধী। ওয়ান কোট ইমালশনে কাজের গুণগত মান অটুট রাখে এবং সময় বাঁচায়। নিখুঁত ও মসৃণ ফিনিশের জন্য গতানুগতিক পেইন্টসের মতো একাধিক কোটের প্রয়োজন নেই।

দেশের রংশিল্প উন্নয়নে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ কী কাজ করছে?

আমরা বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ শুধু রং বিক্রি করছি না; বরং শিল্পের মানোন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের ব্রিটিশ কোম্পানি ফসরকের সঙ্গে কনস্ট্রাকশন কেমিক্যাল, বেকারস গ্রুপের সঙ্গে কয়েল কোটিং, জাপানের সিএমপির সঙ্গে গ্লোবাল পার্টনারশিপ, যুক্তরাষ্ট্রের পিপিজিসহ বিভিন্ন আলোচিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পেশাদার রংশিল্পীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বার্জার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে এ পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি পেশাজীবী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়া নারীদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করতে বার্জার ‘উইমেন পেইন্টার’ কর্মসূচি চালু করেছে, যার মাধ্যমে নারীরা বাড়ির রঙের কাজ করতে পারছেন। 

ভবিষ্যতে আরও উন্নত মানের রংশিল্প গড়ে তুলতে বার্জার নতুন ৮০০ কোটি টাকার কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। আমরা উডকোটিং সলিউশন, টেক্সটাইল ও মেরিনশিল্পের জন্য বিশেষায়িত রং তৈরির পরিধি বাড়াচ্ছি। নতুন প্রজন্মের চাহিদা মাথায় রেখে ‘ডিআইওয়াই কিট’ তৈরি করছি, যা তরুণদের নিজেদের হাতে রং করার সুযোগ দেবে।

সাক্ষাৎকার: জাহিদ হোসাইন খান

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ করছ ন নয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ