চিরকুটে ‘আমাকে বাধ্য করা হয়েছে’ লিখে কিশোরীর আত্মহত্যা
Published: 15th, March 2025 GMT
ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় সহপাঠী নোংরা মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ায় পটুয়াখালীর বাউফলে নাজনিন জাহান কুমকুম (১৫) নামের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের খান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। কুমকুম ওই গ্রামের নজরুল খানের মেয়ে ও পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে কুমকুমকে উত্যক্ত করত প্রতিবেশী রিয়াদুল ইসলাস তাওসীন (১৫)। সেও একই বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। কুমকুমের পরিবার তাওসীনের চাচা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়টি জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল শুক্রবার কুমকুম ও তার আরেক সহপাঠী কিশোরের একটি ছবির সঙ্গে নোংরা মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় তাওসীন। এর পরে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করে কুমকুম।
চিরকুটে কুমকুম লিখেছে, “আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছু করিনি, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য, ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ সাতি (শান্তি) চলে (গেছে)।”
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। প্রথমে পরিবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করাতে চায়নি। তাই, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় কুমকুমের অপমৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়দেরকে ও পুলিশকে জানায়। মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে রাতে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার৷ তখন স্থানীয়রা মরদেহের গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখতে পায়। কুমকুমের রুমে চিরকুটের সন্ধান পান পরিবারের সদস্যরা। পরে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করে পরিবার। রাত ১০টার দিকে পুলিশ কুমকুমের বাড়িতে যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগীর পরিবার। তবু, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঢাকা/ইমরান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, থানায় অভিযোগ করায় নানাকে কুপিয়ে হত্যা
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় কয়েক বখাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন তার স্বজন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নানা আজগর আলীকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়ভাবে বখাটে হিসেবে পরিচিত আল-আমিন নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই গ্রামের মৃত কালু প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ, নিহতের পরিবার এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, যে শিশুটিকে উত্ত্যক্ত করত বখাটেরা, তার মা পাঁচ বছর আগে মারা যান। মেয়েটি নানা আজগর আলীর বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে পড়ত। বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে শিশুটিকে প্রায় উত্ত্যক্ত এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করত আল-আমিন। এ নিয়ে আজগর আলীসহ মেয়েটির স্বজন বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। গত সোমবার মেয়েটির নানা আজগর আলী সিংগাইর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মঙ্গলবার অভিযোগটি তদন্ত করার পর তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় আল-আমিন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আল-আমিন চার থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে সহযোগীদের নিয়ে আজগর আলীর চায়ের দোকানে যায়। তারা বৃদ্ধ আজগর আলীকে দোকান থেকে বের করে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাটিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। হামলাকারীরা চলে গেলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আজগর আলীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে রাতেই তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আজগর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজগর আলীর শ্যালক নজরুল ইসলাম জানান, মাদক সেবন, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত বখাটে আল-আমিন।
সিংগাইর থানার ওসি তৌফিক আজম বলেন, নিহতের বড় ছেলে আইয়ুব খান বুধবার আল-আমিনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে আল-আমিন ও তার সহযোগীরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।