সামরিক বাহিনীর প্রসার চায় জার্মানি সরকার, তা সত্ত্বেও বুন্ডেসভেয়ারে তীব্র সেনা–সংকট চলছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, বুন্ডেসভেয়ারে অনেক পদ এখনো শূন্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ জার্মানির সামরিক বাহিনীর নিচের র‍্যাঙ্কগুলোর মধ্যে ২৮ শতাংশ পদ খালি রয়েছে। বছর শেষে পদোন্নতি দেওয়ার সময় ২০ শতাংশের মতো পদ শূন্য থেকে যাচ্ছে।

তবে ওপরের দিকের র‍্যাঙ্কগুলো তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রতিরক্ষা কমিশনার এফা হ্যোগল একটা নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

বর্তমানে জার্মানির সশস্ত্র বাহিনীতে ১ লাখ ৮১ হাজার সৈন্য রয়েছে।

দায়িত্বশীল অনেকেই ২০১১ সালে স্থগিত হওয়া পুরুষদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন; কিন্তু কমিশনার এফা হ্যোগল মনে করছেন, শুধু এই ব্যবস্থার পুনর্বহালই যথেষ্ট নয়।

বার্লিনে হ্যোগল তাঁর প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় সাংবাদিকদের বলেন, বুন্ডেসভেয়ারের পক্ষে এ মুহূর্তে এটি পরিচালনা করা একটু বেশি বেশিই হবে৷ এ ধরনের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও প্রশিক্ষক বর্তমানে নেই।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে জার্মানি বড় আকারের পুনঃসশস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনে বার্লিনের প্রতিরক্ষানীতিতে পরিবর্তন আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।

রক্ষণশীল সিডিইউ/সিএসইউ জোট ও বামপন্থি এসপিডি জার্মানির পরবর্তী সরকার গঠন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ মুহূর্তে তারা দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশপাশি পরিকাঠামো ও প্রতিরক্ষার দিকটিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ