ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর ডিপ্লোমা ডিগ্রি বাতিল
Published: 19th, March 2025 GMT
ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় মেয়র একরেম ইমামোগলুর ডিপ্লোমা ডিগ্রি বাতিল করেছে। উচ্চশিক্ষা কাউন্সিলের নিয়মকানুনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) এই নেতার ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। ডিগ্রি না থাকায় ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা হুমকিতে পড়েছে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুসহ ৩৮ জন তাদের ব্যবস্থাপনা অনুষদের ইংরেজি-ভাষা প্রোগ্রামে অনিয়মিতভাবে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে এই ঘটনা ঘটেছিল।
ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ১০ জনের ‘স্থানান্তর’ বাতিল করা হয়েছে। আর ইমামোগলুসহ ২৮ জনের ডিপ্লোমা ডিগ্রি ‘স্পষ্ট ভুলের কারণে প্রত্যাহার এবং বাতিল করা হবে’।
ইমামোগলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে নিন্দা প্রকাশ করেছেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।
ইমামোগলু বলেছেন, ‘তারা [বিশ্ববিদ্যালয়] এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। এই ধরনের ক্ষমতা রয়েছে কেবল ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের পরিচালনা পর্ষদের হাতে।
‘যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইতিহাস ও বিচারের সামনে তাদের জবাবদিহি করা হবে। ন্যায়বিচার, আইন এবং গণতন্ত্রের জন্য আমাদের জাতির মধ্যে যে পিপাসা দেখা দিয়েছে সেটার অগ্রযাত্রাকে থামানো যাবে না।’
ইমামোগলুর ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্তকে নিজেদের ‘গণতন্ত্রের ওপর এক বিরাট আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন রিপাবলিকান পিপলস পার্টির আইনপ্রণেতা মুরাত আমির।
বিরোধী দল গুড পার্টির চেয়ারম্যান মুসাভাত দারভিসোগলু বলেছেন, ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রভাব ‘একজন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্মূল করার আওতা ছাড়িয়ে যায়’।
২০২৮ সালের নির্বাচন
তুরস্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনী জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন ইমামোগলু। আশা করা হচ্ছিল, তাঁকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের অবশ্যই উচ্চতর শিক্ষার ডিগ্রি থাকতে হবে।
ইমামোগলু এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইস্তাম্বুলের মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলো তদন্ত ও মামলা চলছে।
ইস্তাম্বুল শহরের কৌঁসুলির সমালোচনা করায় ইমামোগলুর বিরুদ্ধে একটি উন্মুক্ত তদন্ত চলছে। গত জানুয়ারিতে এই তদন্তের প্রশ্নের জবাব দিতে ইস্তাম্বুলের আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। তখন নিজের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তকে ‘হয়রানি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ইমামোগলু।
তুরস্কের উচ্চ নির্বাচন পরিষদের সদস্যদের ‘অপমান’ করার অভিযোগে ইমামোগলুকে ২০২২ সালে দুই বছর সাত মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অবশ্য এই সাজার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।