ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় মেয়র একরেম ইমামোগলুর ডিপ্লোমা ডিগ্রি বাতিল করেছে। উচ্চশিক্ষা কাউন্সিলের নিয়মকানুনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) এই নেতার ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। ডিগ্রি না থাকায় ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা হুমকিতে পড়েছে।

 মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুসহ ৩৮ জন তাদের ব্যবস্থাপনা অনুষদের ইংরেজি-ভাষা প্রোগ্রামে অনিয়মিতভাবে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন। ১৯৯০ সালে এই ঘটনা ঘটেছিল।

ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ১০ জনের ‘স্থানান্তর’ বাতিল করা হয়েছে। আর ইমামোগলুসহ ২৮ জনের ডিপ্লোমা ডিগ্রি ‘স্পষ্ট ভুলের কারণে প্রত্যাহার এবং বাতিল করা হবে’।

ইমামোগলু বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে নিন্দা প্রকাশ করেছেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।

ইমামোগলু বলেছেন,  ‘তারা [বিশ্ববিদ্যালয়] এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে না। এই ধরনের ক্ষমতা রয়েছে কেবল ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের পরিচালনা পর্ষদের হাতে।

‘যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইতিহাস ও বিচারের সামনে তাদের জবাবদিহি করা হবে। ন্যায়বিচার, আইন এবং গণতন্ত্রের জন্য আমাদের জাতির মধ্যে যে পিপাসা দেখা দিয়েছে সেটার অগ্রযাত্রাকে থামানো যাবে না।’

ইমামোগলুর ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্তকে নিজেদের ‘গণতন্ত্রের ওপর এক বিরাট আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন রিপাবলিকান পিপলস পার্টির আইনপ্রণেতা মুরাত আমির।

বিরোধী দল গুড পার্টির চেয়ারম্যান মুসাভাত দারভিসোগলু বলেছেন, ডিগ্রি বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রভাব ‘একজন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্মূল করার আওতা ছাড়িয়ে যায়’।

২০২৮ সালের নির্বাচন

তুরস্কের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচনী জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন ইমামোগলু। আশা করা হচ্ছিল, তাঁকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রিপাবলিকান পিপলস পার্টির ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের অবশ্যই উচ্চতর শিক্ষার ডিগ্রি থাকতে হবে।

ইমামোগলু এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইস্তাম্বুলের মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলো তদন্ত ও মামলা চলছে।

ইস্তাম্বুল শহরের কৌঁসুলির সমালোচনা করায় ইমামোগলুর বিরুদ্ধে একটি উন্মুক্ত তদন্ত চলছে। গত জানুয়ারিতে এই তদন্তের প্রশ্নের জবাব দিতে ইস্তাম্বুলের আদালতে গিয়েছিলেন তিনি। তখন নিজের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তকে ‘হয়রানি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন ইমামোগলু।

তুরস্কের উচ্চ নির্বাচন পরিষদের সদস্যদের ‘অপমান’ করার অভিযোগে ইমামোগলুকে ২০২২ সালে দুই বছর সাত মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অবশ্য এই সাজার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ত ল কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’

দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।

তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’

প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি পৈতৃক সম্পত্তি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
  • এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
  • চ্যাম্পিয়নস লিগ: কোথায় হবে ২০২৮ ও ২০২৯ সালের ফাইনাল