গরম বাড়ছে। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বাজারের গরমও বেড়েছে। এসি বেচাকেনার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন কোম্পানির অফার চলছে। তবে গতবারের চেয়ে এবার এসির দাম কিছুটা বেশি। এসির ক্ষমতাভেদে দাম ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার এসির দাম অন্য এসির চেয়ে বেশি। বিদ্যুৎ বিল কম আসে, তাই গ্রাহকের মধ্যে ইনভার্টার এসির চাহিদা বেশি।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার এসির ব্র্যান্ড দোকানগুলো ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। বর্তমানে এসির চাহিদার বেশির ভাগই দেশে উৎপাদিত হচ্ছে।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের মানুষের একটি বড় অংশের ক্রয়ক্ষমতাও আগের চেয়ে বেড়েছে, যা এসির বাজার বড় হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। আয় বাড়ার পাশাপাশি গত কয়েক বছরে গরমের তীব্রতা এসির চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে।

মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী মোহাম্মদ রিফাত গত শুক্রবার একটি দেড় টন ক্ষমতার এসি কিনেছেন। তিনি বলেন, বেশি গরম পড়ার আগে এসির দাম কম থাকে। এর পাশাপাশি মৌসুমের শুরুতে নানা অফার থাকে। তাই অপেক্ষা না করে কিস্তিতে একটা এসি কিনে ফেলেছি।

ধানমন্ডির বাসিন্দা মো.

ফিরোজ ছোটখাটো ক্লিনিকের মালিক। গত বছর পুরো গরমের সময় তার প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি এসি কিনেছেন। কিন্তু তখন এর দাম বেশি পড়েছিল। তাই এ বছর একটু কম দামে কেনার জন্য আগেভাগে বাসার জন্য এসি কিনে ফেলেছেন তিনি। তিনি জানান, গরম পড়লেই এসির দাম পাঁচ–সাত হাজার টাকা বেড়ে যায়। তাই ৫৮ হাজার ৫০০ টাকা দামি ব্র্যান্ডের একটি দেড় টনের এসি কিনেছেন তিনি।

এসির মৌসুমি বেচাকেনা শুরু

গরম বাড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী এসির দোকানগুলোতে এসি বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। রিংরোড সিঙ্গারের শোরুমে এক সপ্তাহ ধরে এসির বেচাকেনা কিছুটা বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনটি এসি বিক্রি হচ্ছে।

এ শাখার ব্যবস্থাপক এস এম আমির প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর গরমের সময় মাসে ১০০ থেকে ১১৫টি এসি বিক্রি করেছি। এবার এখনো সেভাবে বিক্রি শুরু হয়নি। এক সপ্তাহ ধরে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।’ তিনি জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর তাঁদের এসির দাম এসিভেদে ১–২ হাজার টাকা কমেছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসির ক্রেতারা মোট তিন ধাপে এসি কিনে থাকেন। শীতে নানা ধরনের ছাড় থাকে এসিতে। তাই তখন অনেকেই এসি কিনে থাকেন। আবার কেউ এখন (গরমের শুরুতে) কিনছেন। আর যখন গরম পুরোপুরি পড়বে, তখন আরেক দফা বেচাকেনা হয়।

ডেনকি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরমে চাহিদা বাড়লে প্রতি এসিতে পাঁচ–সাত হাজার টাকা দাম বেড়ে যেতে পারে। তবে পাইকারি বিক্রেতারা দাম না বাড়ালে আমরাও দাম বাড়াব না।’

ঈদের কেনাকাটার পাশাপাশি অনেকে এসি কেনেন। তখন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারে বোনাসের টাকায় এসির কিনে থাকেন। আগামী সপ্তাহ থেকে এসির চাহিদা আরও বাড়তে পারে।

এক-দেড় টন এসির চাহিদা বেশি, দাম কত

বাসাবাড়িতে এক টন থেকে দেড় টন ক্ষমতার এসির চাহিদা বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ চাহিদা দেড় টন ক্ষমতার এসির। ব্র্যান্ডভেদে দেড় টন ইনভার্টার অথবা নন–ইনভার্টার এসি ৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। আর ১ টনের ইনভার্টার অথবা নন–ইনভার্টার এসি পাওয়া যাবে ৪০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে। তবে তুলনামূলক কম দামের এসি বেশি বেচাকেনা হয়। এ ছাড়া এসি কেনায় কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের সুযোগ আছে।

এসির বিক্রি বাড়ে গরমকে কেন্দ্র করে। গরম বেড়ে গেলে অনেক ক্রেতা এসি কিনতে আসেন। ব্যবসায়ীরা জানান, একসময় হিটাচি ও ডাইকিনের দেড় টনের এসি বিক্রি হতো এক লাখ টাকার নিচে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে এক লাখ টাকার বেশি দামে।

এসির মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে যমুনা ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইল লিমিটেডের মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক সেলিম উল্যা প্রথম আলোকে বলেন, এসির কাঁচামাল, ডলারের দাম, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

বর্তমানে দেশে ওয়ালটন, ইলেক্ট্রোমার্ট, ট্রান্সকম, এসকোয়্যার, সিঙ্গার বাংলাদেশ, বাটারফ্লাই, র‍্যাংগ্স, ইলেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল, মিনিস্টার, ভিশন, এলজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এস র চ হ দ এস র দ ম গত বছর দ ড় টন এস র ক র এস র এস র ব র একট ক ষমত গরম র গরম প

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিতে প্রফেশনাল এমএস কোর্স, আবেদনের সময় বৃদ্ধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রফেশনাল এমএস কোর্সে আবদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। তৃতীয় ব্যাচের ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের আবেদনপত্র গ্রহণ ও জমাদানের সর্বশেষ তারিখ ২২ মে ২০২৫। ভর্তি পরীক্ষা ২৩ মে ২০২৫, সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন এক ধাপ বাড়ানোর উদ্যোগ, ভিন্নমত শিক্ষকদের২৮ এপ্রিল ২০২৫আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা: যাত্রা শুরু করবেন কোথা থেকে, কীভাবে?২৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ