রাজধানীর খুচরা বাজারে যেখানে প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে কৃষকরা পাচ্ছেন এর অর্ধেকেরও কম মূল্য। কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে এই দামে বিশাল পার্থক্য কমাতে এবং ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘জনতার বাজার’ নামে একটি বিশেষ বাজার চালু করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।

বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে ‘জনতার বাজার-১’ এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.

শেখ আব্দুর রশীদ। এ সময় ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান।

আয়োজকরা জানান, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম রোধ এবং ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রয়ের জন্য এই বাজারের যাত্রা। মোহাম্মদপুর ছাড়াও কামরাঙ্গীরচরে ‘জনতার বাজার-২’ নামে আরেকটি বাজার স্থাপন করা হয়েছে। ঈদের পর থেকে এই দুই বাজারে চাল, ডাল, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, শাক-সবজি, মাছ ও মাংস বিক্রি করা হবে। পাশাপাশি মজুত ব্যবস্থাপনা ও রিয়েল টাইম মূল্যের তথ্য প্রদর্শনের জন্য একটি আধুনিক সফটওয়্যার চালু করা হবে।

তারা আরও জানান, বাজার দুটিতে ভালো সাড়া পাওয়া গেলে ঢাকার বাড্ডার বড় বেরাইদ বাজার, গুলশানের ঢেলনা মসজিদ মাঠ এবং ডেমরার সারুলিয়া বাজার এলাকাতেও এ ধরনের বাজার চালু করা হবে। এই বাজারে পাইকারি ভিত্তিতে কোনো পণ্য বিক্রয় করা হবে না। সাধারণ ক্রেতারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে পারবেন।

ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে- একটি পণ্য কৃষকের হাত থেকে ৭-৮ পর্যায় ঘুরে ভোক্তার হাতে পৌঁছায় এবং প্রতিটি পর্যায়েই লাভ হয়, ফলে দাম বেড়ে যায়।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরবরাহ বাড়ানোই সবচেয়ে কার্যকর। আমরা অনেক সময় দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সরবরাহ বৃদ্ধি। জনতার বাজারে সরাসরি কৃষকের হাত থেকে পণ্য আসবে বলে ভোক্তা ন্যায্যমূল্যে পণ্য পাবেন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে ফ্রেশ সবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্য সরাসরি জনতার বাজারে আসবে। মানুষ কম দামে ভালো পণ্য পাবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ। তরুণ উদ্যোক্তারা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তাদের সাধুবাদ জানাই। এটি আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। সফল হলে অন্যান্য জায়গাতেও এ উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’

গত বছরের ১৭ নভেম্বর ঢাকা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ‘জনতার বাজার’ নিয়ে আলোচনা হয়। পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের জন্য ঢাকা শহরের ছয়টি স্থানে বাজার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। পরে বাজারের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ ও জনবল নিয়োগ করে আগ্রহী উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ করে বাজার পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।

সুষ্ঠুভাবে বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে ‘জনতার বাজার পরিচালনা নীতিমালা-২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জনত র ব জ র মন ত র র জন য যপণ য

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম

ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।

আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।

সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।

পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুপেয় পানির সংকট, কাজে আসছে না কোটি টাকার প্রকল্প
  • নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
  • সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
  • ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করলে কী কী ঘটতে পারে?
  • ইরান–ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা রূপ নিতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতে
  • ইরানে হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • ভারত থেকে আইফোন রপ্তানি কেন বাড়ছে
  • সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
  • কমেছে সবজির দাম
  • বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম