মোহাম্মদপুরে ‘জনতার বাজার’ উদ্বোধন, মিলবে ন্যায্যমূল্যে পণ্য
Published: 19th, March 2025 GMT
রাজধানীর খুচরা বাজারে যেখানে প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে কৃষকরা পাচ্ছেন এর অর্ধেকেরও কম মূল্য। কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে এই দামে বিশাল পার্থক্য কমাতে এবং ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘জনতার বাজার’ নামে একটি বিশেষ বাজার চালু করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।
বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে ‘জনতার বাজার-১’ এর উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.
আয়োজকরা জানান, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম রোধ এবং ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রয়ের জন্য এই বাজারের যাত্রা। মোহাম্মদপুর ছাড়াও কামরাঙ্গীরচরে ‘জনতার বাজার-২’ নামে আরেকটি বাজার স্থাপন করা হয়েছে। ঈদের পর থেকে এই দুই বাজারে চাল, ডাল, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, শাক-সবজি, মাছ ও মাংস বিক্রি করা হবে। পাশাপাশি মজুত ব্যবস্থাপনা ও রিয়েল টাইম মূল্যের তথ্য প্রদর্শনের জন্য একটি আধুনিক সফটওয়্যার চালু করা হবে।
তারা আরও জানান, বাজার দুটিতে ভালো সাড়া পাওয়া গেলে ঢাকার বাড্ডার বড় বেরাইদ বাজার, গুলশানের ঢেলনা মসজিদ মাঠ এবং ডেমরার সারুলিয়া বাজার এলাকাতেও এ ধরনের বাজার চালু করা হবে। এই বাজারে পাইকারি ভিত্তিতে কোনো পণ্য বিক্রয় করা হবে না। সাধারণ ক্রেতারা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে- একটি পণ্য কৃষকের হাত থেকে ৭-৮ পর্যায় ঘুরে ভোক্তার হাতে পৌঁছায় এবং প্রতিটি পর্যায়েই লাভ হয়, ফলে দাম বেড়ে যায়।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরবরাহ বাড়ানোই সবচেয়ে কার্যকর। আমরা অনেক সময় দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, কিন্তু সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সরবরাহ বৃদ্ধি। জনতার বাজারে সরাসরি কৃষকের হাত থেকে পণ্য আসবে বলে ভোক্তা ন্যায্যমূল্যে পণ্য পাবেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে ফ্রেশ সবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্য সরাসরি জনতার বাজারে আসবে। মানুষ কম দামে ভালো পণ্য পাবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ। তরুণ উদ্যোক্তারা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তাদের সাধুবাদ জানাই। এটি আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। সফল হলে অন্যান্য জায়গাতেও এ উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’
গত বছরের ১৭ নভেম্বর ঢাকা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় ‘জনতার বাজার’ নিয়ে আলোচনা হয়। পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রয়ের জন্য ঢাকা শহরের ছয়টি স্থানে বাজার প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। পরে বাজারের স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ ও জনবল নিয়োগ করে আগ্রহী উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ করে বাজার পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
সুষ্ঠুভাবে বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য ইতোমধ্যে ‘জনতার বাজার পরিচালনা নীতিমালা-২০২৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনত র ব জ র মন ত র র জন য যপণ য
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।