ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গতকাল শুক্রবার তার্কিশ-প্যালেস্টাইন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল ও সংলগ্ন একটি মেডিকেল বিদ্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এটি গাজায় ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল ছিল।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দেশটির সামরিক বাহিনীকে ‘গাজা উপত্যকায় আরও এলাকা দখল করে নেওয়ার’ নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি হুমকি দেন, হামাস যদি বাকি জিম্মিদের মুক্ত না করে, তবে গাজার কিছু অংশ স্থায়ীভাবে দখল করে নেওয়া হবে।

হাসপাতালে হামলা নিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী বলেছে, হাসপাতাল এলাকায় হামাসের সদস্যরা অবস্থান করছিলেন। তাই সেখানে হামলা চালানো হয়েছে।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ওই ভিডিও প্রকাশ করেছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনের তথ্য, নেতজারিম করিডর সম্প্রসারণ করা এবং আরও বাফার জোর (সংঘাতের প্রভাব এড়াতে বিশেষ অঞ্চল) প্রতিষ্ঠায় হাসপাতালটিতে হামলা চালানো হয়েছে।

এ ছাড়া গতকাল ইসরায়েলি বাহিনী বুলডোজার চালিয়ে আরও আবাসিক ভবন আর কৃষিজমি ধ্বংস করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আল-জাজিরা।

আরও পড়ুনইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ২২ ঘণ্টা আগে

গাজার একমাত্র ক্যানসার হাসপাতালটিতে হামলার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে সামরিক বাহিনীর বরাতে বলা হয়েছে, হাসপাতাল ভবনটি এক বছরের বেশি সময় ধরে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার হচ্ছিল না। সেখান থেকে হামাসের সদস্যরা কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

এ হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

বিবিসির খবরে গাজায় স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনী গাজায় ‘ক্রমবর্ধমান তীব্রতার সঙ্গে’ স্থল অভিযান চালিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনগাজায় কেন আবার হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে ইসরায়েল ২১ মার্চ ২০২৫

ধারণা করা হচ্ছে, গাজায় জিম্মি থাকা ৫৯ জনের মধ্যে এখন ২৪ জন বেঁচে আছেন। যদিও যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁদের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

গত জানুয়ারিতে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। গত সপ্তাহে নতুন করে গাজায় বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। শুরু করা হয় স্থল অভিযান। হামলা-অভিযানে শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হন। আর এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধবিরতি কার্যত ভেস্তে যায়।

ইসরায়েল কাৎজ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব দেওয়া গাজার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে তাঁর দেশ।

আরও পড়ুনযুদ্ধেই জন্ম শিশুর, যুদ্ধেই শহীদ২০ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের ক্ষমতায় টিকে থাকতে গাজায় নতুন করে নৃশংসতা চালাচ্ছেন নেতানিয়াহু২০ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে আরেকজনের মৃত্যুদণ্ড

ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বাবাক শাহবাজি নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। আজ বুধবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ও তাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান।

আরও পড়ুনইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে গ্রেপ্তার ৮৩০ আগস্ট ২০২৫

এ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ইরানে এ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত কয়েক মাসে অভিযুক্ত অন্তত নয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটি।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাবাক শাহবাজি ২০২২ সালের শুরু থেকে আরেক গুপ্তচর ইসমাইল ফেকরির সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে চলতি বছরের জুনে ইসমাইল ফেকরিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আরও তিনজনকে ফাঁসি দিল ইরান২৫ জুন ২০২৫

বাবাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ঘর ঠান্ডা রাখার যন্ত্র স্থাপনের কাজ করতেন। এ কাজের সুযোগ নিয়ে তিনি নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেমন সার্ভার রুম এবং সামরিক ও নিরাপত্তাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ইরানি কেন্দ্রগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন।

আসামির আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে আপিলের আবেদন করেছিলেন। তবে সে আবেদন খারিজ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনইসরায়েলি গুপ্তচরদের সঙ্গে আরও যাঁরা ইরানকে দুর্বল করছেন২৬ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানে আরেকজনের মৃত্যুদণ্ড