নওগাঁর পত্নীতলা থেকে পৃথক দুটি অভিযানে ১১৯ কেজি গাঁজাসহ ৬ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা।

শনিবার দুপুরে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার মামুদপুর বাজার এলাকা ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পত্নীতলা উপজেলার মামুদপুর এলাকার ফারাজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মাতাব্বর হোসেন (৪৮), ভিকারী চৌধুরীর ছেলে নিতাই চৌধুরী (৪২), শম্ভুপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪), হবিগঞ্জ জেলার গুমুটিয়া এলাকার অজিতদেবের ছেলে অপুদেব (২৯), মাধবপুর উপজেলার মাধবপুর বাজার এলাকার অজিত পালের ছেলে রিপন পাল (৩৬), এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কাজীপাড়া এলাকার লিটন পালের ছেলে আনন্দ পাল (২১)।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র‌্যাব-৫ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েকদিন ধরে মাতাব্বর এবং নিতাইয়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মামুদপুর বাজার ও নজিপুর এলাকার সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অভিনব কায়দায় প্রাইভেটকারের ব্যাক ডালায় এবং কার্টুনে লুকানো মোট ১১৯ কেজি গাঁজাসহ ৬ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর মাতাব্বর এবং নিতাই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে গাঁজার চালান সংগ্রহ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করতেন।

তাদের বিরুদ্ধে পত্নীতলা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী পৃথক দুটি মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র য ব র অভ য ন ক রব র র এল ক এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সুন্দরবনের বড় গেছো প্যাঁচা