ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত করার জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অনুমোদন হওয়া খসড়া অনুযায়ী ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবৈধ যৌন সম্পর্ক’কে ধর্ষণের সংজ্ঞায় রাখা হয়নি। এটি আইনে আলাদা ধারায় চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হবে সাত বছরের কারাদণ্ড। (প্রথম আলো অনলাইন, ২০ মার্চ ২০২৫)

বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিয়ে ছাড়া ১৬ বছরের বেশি বয়সী নারীর ক্ষেত্রে প্রতারণামূলকভাবে তাঁর সম্মতি আদায় করে যৌন সংগম করাকে ধর্ষণ হিসেবে বলা হয়েছে। এর ফলে বহু মামলায় বিয়ের ‘প্রতিশ্রুতি’ বা ‘প্রলোভনে’ ধর্ষণ, এ রকম অভিযোগের উল্লেখ দেখা যায়।

অনুমোদিত খসড়া অনুযায়ী ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে অবৈধ যৌন সম্পর্ক’কে ধর্ষণের সংজ্ঞায় না রাখার বিষয়টি এক অর্থে ‘ইতিবাচক’। কিন্তু এর পরও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে।

আগে ‘প্রতারণামূলকভাবে সম্মতি আদায়ের’ কথা বলা হলেও  সংশোধিত খসড়া অধ্যাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে ‘বিয়ের প্রলোভনে যৌন সম্পর্ক’কে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তির বিধান করা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী করলে প্রকৃত অর্থে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে, তার সুস্পস্ট কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। কেউ বিয়ের কথা বলে যৌন সম্পর্ক করার সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধ সংঘটিত হবে, নাকি পরবর্তী সময়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি পালন না করলে অপরাধ হবে? অর্থাৎ অপরাধকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।

সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর প্রতিশোধপরায়ণ কেউ এ আইনের অপব্যবহার করতে পারেন। কেউ কেউ এ রকম ধারায় মামলা করে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করতে পারেন। এর ফলে মামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, মামলাবাণিজ্যও হতে পারে।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখালেই তিনি শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বেন—এই ধরনের চিন্তা বা অনুমান খুবই পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। এ দৃষ্টিভঙ্গিতে একজন নারীকে  ‘লোভী’ বা ‘নির্বোধ’ হিসেবে দেখা হয়, যিনি কোনো পুরুষের প্রলোভনে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পরেন। আর এ ক্ষেত্রে তাঁর পুরুষ সঙ্গীটির সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

সম্মতির ভিত্তিতে প্রাপ্তবয়স্ক নারী–পুরষের শারীরিক সম্পর্কে ‘কন্ট্রিবিউটরি পার্টিসিপেশন’ থাকে। তাহলে শুধু এক পক্ষকে শাস্তি দেওয়া ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। অনেক ক্ষেত্রে  নারীরাও প্রেম বা সম্পর্ক ভেঙে দেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর প্রাক্তন কি একইভাবে সেই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন? খসড়া অধ্যাদেশে এ রকম কোনো কিছুর সুযোগ নেই। তাহলে আইনের এ ধারাটা কি বৈষম্যমূলক হচ্ছে না?

‘বিয়ের প্রলোভনে যৌন সম্পর্ক’কে- অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হলে ‘ব্লাকমেলিং’ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর প্রতিশোধপরায়ণ কেউ এ আইনের অপব্যবহার করতে পারেন। কেউ কেউ এ রকম ধারায় মামলা করে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করতে পারেন। এর ফলে মামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, মামলাবাণিজ্যও হতে পারে।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া বা তা রক্ষা করা একটি নৈতিক এবং সামাজিক বিষয় হতে পারে, কিন্তু শুধু প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার কারণে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা কোনোভাবেই ন্যায়সংগত নয়। সম্পর্কের টানাপোড়েন, ব্যক্তিগত মতপার্থক্য বা পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে অনেক সময়ই কারও পক্ষে বিয়ের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব না–ও হতে পারে। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় না রেখেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা সমাজ ও রাষ্ট্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে—এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

ইশরাত হাসান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ হ স ব আশঙ ক এ রকম

এছাড়াও পড়ুন:

এমি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫: বিজয়ী হলেন যারা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পিকক থিয়েটারে স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত হয় প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ডসের ৭৭তম আসর। এবারের আসরে ১৩টি পুরস্কার জিতে বাজিমাত করেছে ‘দ্য স্টুডিও’। এর মধ্যে সেরা কমেডি সিরিজের পুরস্কারও রয়েছে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নেট বারগেৎজি।

এমি বিজয়ী হলেন যারা—
সেরা কমেডি সিরিজ: দ্য স্টুডিও
সেরা ড্রামা সিরিজ: দ্য পিট
সেরা লিমিটেড বা অ্যানথোলজি সিরিজ: অ্যাডোলেসেন্স

আরো পড়ুন:

সত্যিই কি ফের বাবা হয়েছেন তাহসান?

রিসোর্ট খুঁজছেন ফারিয়া, সারজিস কী পরামর্শ দিলেন?

সেরা অভিনেতা (ড্রামা সিরিজ): নোয়া হয়াইল, (দ্য পিট)
সেরা অভিনেতা (কমেডি সিরিজ): সেঠ রোগেন (দ্য স্টুডিও)
সেরা অভিনেত্রী (ড্রামা সিরিজ): ব্রিট লোয়ার (সেভারেন্স)
সেরা অভিনেত্রী (কমেডি সিরিজ): জিন স্মার্ট (হ্যাকস)

সেরা অভিনেতা (লিমিটেড/অ্যানথোলজি সিরিজ): স্টিফেন গ্রাহাম (অ্যাডোলেসেন্স) 
সেরা অভিনেত্রী (লিমিটেড সিরিজ/মুভি): ক্রিস্টিন মিলিওতি (দ্য পেঙ্গুইন)

সেরা পরিচালক (ড্রামা সিরিজ): অ্যাডাম র‍্যানডাল, (স্লো হর্সেস, হ্যালো গুডবাই)
সেরা পরিচালক (কমেডি সিরিজ): সেঠ রোগেন ও ইভান গোল্ডবার্গ (দ্য স্টুডিও, দ্য অনার)
সেরা পরিচালক (লিমিটেড সিরিজ): ফিলিপ বারান্তিনি (অ্যাডোলেসেন্স)

সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (কমেডি): হান্না আইনবাইন্ডার (হ্যাকস)
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (কমেডি): জেফ হিলার (সামবডি সামহোয়ার)
সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (ড্রামা): ক্যাথেরিন লানাসা (দ্য পিট)
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (ড্রামা): ট্রামেল টিলম্যান (সেভারেন্স)

সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী (লিমিটেড সিরিজ অথবা টিভি চলচ্চিত্র): এরিন ডোহার্টি (অ্যাডোলেসেন্স)
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা (লিমিটেড সিরিজ অথবা টিভি চলচ্চিত্র): ওয়েন কুপার (অ্যাডোলেসেন্স)

ভ্যারাইটি টক সিরিজ: দ্য লেট শো
ভ্যারাইটি স্ক্রিপ্টেড সিরিজ: লাস্ট উইক টুনাইট উইথ জন অলিভার

 

তথ্যসূত্র: ভ্যারাইটি

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক মহড়ায় কেন অংশ নিল ভারত
  • তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫৪ পদের চাকরি, করুন আবেদন
  • বাংলাদেশে সফরের সূচি জানিয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়া চলছিল, ‘অবাক করে দিয়ে’ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা
  • ভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা
  • এমি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫: বিজয়ী হলেন যারা