নাটকীয় ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে প্রথমবার সেমিফাইনালে জার্মানি
Published: 24th, March 2025 GMT
রোববার দিবাগত রাতে উয়েফা নেশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধেই দুর্দান্ত খেলে জার্মানি। জোশুয়া কিমিখের এক পেনাল্টি গোল এবং তার দুটি দুর্দান্ত অ্যাসিস্টে জামাল মুসিয়ালা ও টিম ক্লেইনডিনস্ট গোল করে দলকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে ইতালির দারুণ প্রত্যাবর্তনে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হলেও দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানের জয়ে প্রথমবার উয়েফা নেশন্স লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় জার্মানির।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য দুর্দান্তভাবে ফিরে আসে ইতালি। ময়েস কিন জোড়া গোল করে স্বাগতিকদের চাপে ফেলে দেন। ৭৩তম মিনিটে ইতালি পেনাল্টি পেলেও ভিএআর সেটি বাতিল করে। তবে, যোগ করা সময়ে জিয়াকোমো রাসপাদোরি পেনাল্টি থেকে গোল করলে ম্যাচে উত্তেজনা ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত ৩-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে প্রথমবার সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় জার্মানি।
প্রথম লেগে মিলানে ২-১ ব্যবধানে হারের পর ইতালি ডর্টমুন্ডে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। ইনজুরির কারণে রিকার্ডো কালাফিওরি, আন্দ্রেয়া কাম্বিয়াসো, মাতেও রেতেগুই এবং ফেদেরিকো ডিমার্কোর মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়াই এদিন খেলতে নামে ইতালি।
আরো পড়ুন:
রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে সেমিফাইনালে পর্তুগাল
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভিন্ন ভাবনায় তপু বর্মন
ইতালির কোচ লুসিয়ানো স্পাল্লেত্তি ম্যাচের আগে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের অসম্ভব কিছু করতে হবে।’’ কিন্তু জার্মানি ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে। তাদের প্রথম গোল আসে পেনাল্টি থেকে। যেখানে আলেসান্দ্রো বুয়নজিওর্নো বক্সের ভেতরে ক্লেইনডিনস্টকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। আর কিমিখ স্পট কিক থেকে গোল করেন।
এরপর, ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি ডোন্নারুম্মা জার্মানির ক্লেইনডিনস্টের একটি হেড রুখে দিলেও, দ্রুত নেওয়া কর্নার থেকে কিমিখের পাসে মুসিয়ালা সহজেই গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ক্লেইনডিনস্টের আরেকটি হেড ডোন্নারুম্মা আটকালেও, এবার বল গোললাইন পেরিয়ে যায়। রেফারি তার ঘড়ির দিকে ইঙ্গিত করে গোল নিশ্চিত করলে মাঠে উল্লাসে ফেটে পড়ে স্বাগতিক দর্শকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে জার্মানি তাদের গতি কিছুটা কমিয়ে দিলে সুযোগ নেয় ইতালি। ৪৯তম মিনিটে ময়েস কিন একটি ঢিলেঢালা বল পেয়ে গোল করেন। এরপর, স্পাল্লেত্তি রাসপাদোরিকে মাঠে নামান, যিনি ৬৮তম মিনিটে দারুণ এক পাস বাড়ান কিনের উদ্দেশে। কিনের নিখুঁত শটে জার্মানির গোলরক্ষক অলিভার বাউমান পরাস্ত হন।
৭৩তম মিনিটে ইতালি আরও একটি সুযোগ পায়, যখন রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। কিন্তু ভিএআর চেক করে সেটি বাতিল করে। যোগ করা সময়ে রাসপাদোরি আরও একটি পেনাল্টি থেকে গোল করলেও, তা শুধু ব্যবধান কমানোর কাজেই আসে। শেষ পর্যন্ত, জার্মানি দুই লেগ মিলিয়ে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল স ম ফ ইন ল ব যবধ ন গ ল কর প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
এক দিনেই কত কীর্তি গড়লেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর তাঁকে ছেড়ে একা আর সংবাদ সম্মেলনে আসতে চাইলেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন।
মিরাজ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পর ফটোগ্রাফারদের আবদার মেটাতে ব্যস্ত বলে কিছুটা অপেক্ষাও করলেন। এরপর মিরাজের তাড়া ছিল নামাজে যাওয়ারও, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শেষে তাই একরকম দৌড়ে যান ড্রেসিংরুমে।
এর আগে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেছেন ছয়জনকে। মিরাজ দিনের শুরুটা করেছিলেন ব্যাটিংয়ে, শেষটা করেছেন বোলিংয়ে। ব্যাটিং, বোলিং মিলিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে একটার পর একটা রেকর্ড গড়েছেন মিরাজ।
ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি করেছেন, সেঞ্চুরির পথে দুই হাজার রানের মাইলফলক ছুয়েছেন; দুই শ উইকেট আর দুই হাজার রানের কীর্তিতে নাম লিখিয়েছেন সাকিবের পাশে, যদিও ম্যাচ একটি কমও খেলেছেন।
আবার বল হাতে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই ম্যাচে সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটের কীর্তিতে সাকিব আর সোহাগ গাজীর সঙ্গে এখন তাঁর নামও। এত সব কীর্তি গড়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মিরাজ বললেন, ‘শুরুতে আমি দুইটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’ ওই দুটি ধন্যবাদই ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য।
বিসিবির কোচ মিজানুর রহমানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ‘অনেক দিন ধরে কাজ করা’ ব্যাটিংয়ে উন্নতিতে অবদানের জন্য। মিরাজের পরের কৃতজ্ঞতাটা শুনুন তাঁর মুখেই, ‘আমাদের দলের যে ম্যানেজার আছেন, নাফিস ইকবাল ভাই আমাকে সব সময় বুস্টআপ করে। আজকেও যখন ব্যাটিংয়ে যাচ্ছিলাম, বারবার একটা কথা বলছিল, মিরাজ, তুই কিন্তু প্রপার ব্যাটসম্যান, তোর কিন্তু এক শ আছে। দুইটা মানুষকে (মিজান ও নাফিস) অবশ্যই মনের ভেতর থেকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
কিন্তু মিরাজের সব কীর্তি তো আর ব্যাটিংয়ে নয়। বোলিংয়েও ৫ উইকেট পেয়েছেন। সিলেটে আগের ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ১০টি। এ কৃতজ্ঞতাও একজনের জন্য রাখলেন মিরাজ, ‘বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে। বোলিং তো আমার দলের সঙ্গেই আছে, আমার গুরু যে সোহেল ইসলাম (জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ)। অবশ্যই এই তিনটা মানুষকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
ধন্যবাদ দেওয়ার সংখ্যাটা তিনে গিয়েই থামেনি মিরাজের। আজকে যে তিনি সেঞ্চুরিটা পেলেন, তাতে তো অবদান আছে তাঁর সঙ্গীদেরও। তাইজুল ইসলাম ৪৫ বলে ২০, তানজিম হাসান ৮০ বলে ৪১ আর রান না করতে পারলেও হাসান মাহমুদ ১৬ বল খেলেছেন বলেই না সেঞ্চুরি করার সময়টা পেলেন মিরাজ।
একসময় সেঞ্চুরিটাকে ‘কপালের ওপর’ ছেড়ে দেওয়া মিরাজ ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁদেরও, ‘হাসান অনেক ভালো সমর্থন দিয়েছে, তানজিমও অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে, তাইজুল ভাইও। আমি অবশ্যই এই তিনজনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ওরা যেভাবে আমাকে সমর্থন দিয়েছে, ওদের জন্যই আমি এক শ করতে পেরেছি।’