সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তেইশের ছিলা এলাকায় লাগা আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, নিকটবর্তী ভোলা নদীতে ভাটার কারণে গত রাত থেকে পানি ছিটানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরো সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, সুন্দরবনে পরপর দুটি অগ্নিকাণ্ড তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) তেইশের ছিলা এলাকার অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে, রবিবার সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকার অগ্নিকাণ্ড তদন্তে একটি কমিটি গঠন হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে। খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক (সিএফ) ইমরান আহমেদ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনের আগুন নেভাতে জোয়ারের অপেক্ষা

সুন্দরবনে আগুনের তীব্রতা কমলেও নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ

তিনি বলেন, ‘‘আমরা তেইশের ছিলা এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে, জায়গাটি খুবই দুর্গম। পানির প্রাপ্যতা নিয়ে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব আগুন সম্পূর্ণরূপে নির্বাপণের চেষ্টা চলছে।’’

তেইশের ছিলা এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে বন বিভাগের সদস্যদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ড্রোন দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, ‘‘আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে এখনো কোথাও কোথাও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। জোয়ার না আসা পর্যন্ত পানি ছিটানো সম্ভব নয়, তাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগবে।’’

ফায়ার সার্ভিসের খুলনা বিভাগীয় সহকারী পরিচালক মো.

আবু বক্কর জামান বলেন, ‘‘খুলনা ও বাগেরহাটের ১০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভাটার কারণে নদীতে পানি না থাকায় আপাতত পানি ছিটানো যাচ্ছে না। জোয়ার এলেই আবার পানি ছিটানোর কাজ শুরু হবে।’’

ঢাকা/শহিদুল/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন স ন দরবন এল ক র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার 

বাঘ পাচারকারী ও চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াতে হবে। বাঘ সংরক্ষণের সুফল জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে। 

বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাজধানীর বন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সচিবালয় থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণী নয়, এটি বাংলাদেশের গর্ব ও জাতিসত্তার প্রতীক। যেমন আমরা সুন্দরবন নিয়ে গর্ব করি, তেমনি গর্ব করি রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়েও। সাহস, ভালোবাসা ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে আমরা বাঘকে দেখি। ক্রিকেটারদের ‘টাইগার’ নামে ডাকাও সেই আবেগের বহিঃপ্রকাশ।’’

সাম্প্রতিক বাঘ শুমারির ফল তুলে ধরে উপদেষ্টা জানান, কিছু ইতিবাচক উদ্যোগের কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে হরিণ শিকারে নিয়ন্ত্রণ, বারবার অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ এবং চোরা শিকার রোধে আরও কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘‘বাঘের মৃত্যু ও পাচারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। মানুষ-বাঘ দ্বন্দ্বও বেড়েছে। এজন্য সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় সামাজিক সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।’’

পাশাপাশি সুন্দরবনে অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘কারা চোরাকারবারি, আর কারা বিকল্প জীবিকার সুযোগ পেলে সেই পথ পরিহার করবে তাদের তালিকা তৈরি করে জানাতে হবে, যেন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি।’’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায়, পরিবেশ সংরক্ষণে এবং বাঘকে টিকিয়ে রাখতে সম্মিলিতভাবে সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।’’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। 

অনুষ্ঠানে ‘সুন্দরবনে সংঘাতপ্রবণ বাঘ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ এবং ‘টাইগারস্ অব দ্য সুন্দরবনস’ শীর্ষক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পাশাপাশি, সুন্দরবনভিত্তিক পটের গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।

ঢাকা/এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঘ রক্ষায় সুন্দরবনের চারপাশে হবে সুরক্ষাবলয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার