ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড গাজার আরো অঞ্চল দখল করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হামাস যদি বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে গড়িমসি করে তাহলে গাজা উপত্যকার অঞ্চল দখল করে নেওয়া হবে।”

বুধবার (২৬ মার্চ) পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহু এ ঘোষণা দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।

নেতানিয়াহু এমন এক সময়ে এই হুমকি দিলেন, যার মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে তার দেশ গাজায় নতুন করে হামলা চালানো শুরু করেছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি নতুন করে নিহত হয়েছেন আর সর্বমোট নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজার।

আরো পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৭ শিশুসহ নিহত ২৩

গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২১ 

নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাস যত বেশি আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাবে, আমাদের দমন-পীড়ন তত বেশি শক্তিশালী হবে। এর অঞ্চল দখল করা এবং অন্যান্য বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত।”

গাজায় এখনো ইসরায়েলের ৫৯ জন বন্দি রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ২৫ জন এখনো জীবিত বলে ইসরায়েল মনে করে।

জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সম্মত যুদ্ধবিরতি কাঠামোর দ্বিতীয় পর্যায়ে জীবিত সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে, চুক্তির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরবর্তী ধাপে কোনো চুক্তি ছাড়াই ইসরায়েল গাজায় পুনরায় আক্রমণ শুরু করে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গত সপ্তাহে একই ধরনের হুমকি দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে কাটজ বলেছিলেন, ‘আমি (সেনাবাহিনীকে) গাজায় আরো বেশি অঞ্চল দখলের নির্দেশ দিয়েছি.

..হামাস যত বেশি বন্দীদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করবে, তত বেশি অঞ্চল তারা হারাবে, যা ইসরায়েলের অন্তর্ভুক্ত হবে।’

তবে হুমকির পর পালটা জবাব দিয়েছে হামাসও। 

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলছে, ইসরায়েল যদি বন্দিদের উদ্ধারের জন্য ‘বল প্রয়োগ করে’, তাহলে তাদের ‘কফিনে’ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। 

এছাড়াও হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা এবং পুনরায় যুদ্ধ করা নেতানিয়াহুর একটি ‘পূর্বপরিকল্পিত ‍সিদ্ধান্ত’ ছিল।

হামাস আরো জানায়, চুক্তির ব্যর্থতার জন্য সম্পূর্ণ দায় নেতানিয়াহুর। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মধ্যস্থতাকারীদের অবশ্যই তাকে আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং আলোচনার পথে ফিরে আসার জন্য চাপ দিতে হবে। 

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ