ফড়িং সোনা, ঈদের ছুটি কাটাতে কেউ যাচ্ছো গ্রামে, কেউবা দর্শনীয় কোনো স্থানে। কেউ আবার দেশের বাইরে। এই ঈদের ছুটিকে আরও রাঙিয়ে তুলতে পারো গল্পের বইয়ের সঙ্গে। শৈশব প্রকাশ থেকে প্রকাশিত এমন কিছু মন রাঙানো বইয়ের খোঁজ দিচ্ছেন আশিক মুস্তাফা
স্কুলে ছুটির ঘণ্টা পড়েছে সে কবে! তা ঈদে কই যাচ্ছো? নিশ্চয় কেউ যাচ্ছো বাড়ি, কেউ আবার ঠিক করেছো দর্শনীয় স্থানে ঘুরে দেখার। কেউ আবার দেশের বাইরে। বলি, তোমাদের মতো জুটুন মামাও ঘুরতে যায়। সুযোগ পেলেই তার মন যেন পালাই পালাই করে! কিছুদিন আগের কথা। জুটুন মামা গেলো সুন্দরবন। যাওয়ার আগে অরণ্যদের কথা দিয়ে গেলো তাদের জন্য একটি বাঘের বাচ্চা নিয়ে আসবে। সেই বাচ্চার গলায় দড়ি দিয়ে তারা পাড়ায় ঘুরবে! এসব শুনে অরণ্যরা টিফিনের টাকা জমিয়ে জুটুন মামাকে একটা বাঘের টিশার্ট বানিয়ে দিল। জুটুন মামাও সেই ভাব নিয়ে গেলো সুন্দরবন। বনেই নাকি ঘর তুলে থাকবেন। কিন্তু কী হলো? সেই জুটুন মামাই নাকি খেয়েছেন বাঘের থাবড়া। তারপর? তারপর তো একেবারে অজ্ঞান! জ্ঞান ফেরার পর কী হলো? সে আমি বলতে পারবো না বাপু। জুটুন মামার ঘটনা তো এই সেদিনের। এবার শোনো অনেক অনেক আগের কথা। স্পেন দেশে ছিল এক ষাঁড়। নাম ফার্ডিনান্ড। অন্য যেসব ষাঁড়ের সঙ্গে সে থাকতো সেগুলো সব লাফাতো, ঝাঁপাতো, দৌড়াতো, মাথাগুলো এক করে গুঁতোগুঁতি করতো। ফার্ডিনান্ড সেসবের কিছুই করতো না। কেবলই চুপচাপ বসে ফুলের ঘ্রাণ নেওয়াই পছন্দ ছিল তার। দূরে চারণভূমিতে একটা কর্কগাছের নিচে প্রিয় একটা জায়গা ছিল তার। ওটাই ছিল তার পছন্দের গাছ। সেটির নিচেই সারাদিন বসে থাকতো আর ফুলের ঘ্রাণ নিতো সে। তারপর কী হলো? তারপরের ঘটনা তোমরাই পড়ে নাও। বলবে কোথায়? বলি ‘জুটুন মামার বাঘযাত্রা’ এবং ‘গল্পটা ফার্ডিনান্ডের’ বইয়ে। কেবল এই দুটি গল্প নয়; এমন আরও অনেক অনেক মজার গল্প পাবে ‘সেকেন্ড নিয়ে তুলকালাম’, ম্যাওয়ের কত সাহস’, ‘ভাগ্য জয় করল তারা’, ‘কে তোমার সুপার শক্তিশালী বন্ধু’ এবং ‘রিয়ানা ও বুড়ো মামা’ বইয়ে।
এই বইগুলোসহ আরও এত্তো এত্তো বই কেবল তোমাদের জন্যই লেখা। এসব বইয়ে গল্পগুলো পড়লে মনে হবে তোমার আশপাশের কোনো ঘটনা কিংবা তোমার প্রিয় প্রাণীকে নিয়ে লেখা। আবার তুমি যা ভাবো তাও খুঁজে পেতে পারো এই বইগুলোতে। যারা এই বইগুলো লিখেছেন তারা এতো সহজ ভাষায় লিখেছেন, বুঝতে কোনো কষ্টই হবে না তোমাদের। আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে, তোমরা ভাবনায় যেসব চরিত্রের সঙ্গে ওঠাবসা করো সেসব চরিত্র ধরে এনে যেন লেখা হয়েছে গল্পগুলো। ফলে গল্পগুলো আরও সহজে বুঝতে পারবে তোমরা। রঙিন এই বইগুলো তোমাদের মতো ছোট্টমোট্ট অনেক পণ্ডিতের ভাবনাকে রাঙিয়ে তুলছে। তাই বলছিলাম কি, ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে শৈশব প্রকাশের এই বইগুলো সংগ্রহ করে ইচ্ছেমতো ছুটিকে রাঙিয়ে তুলতে পারো।
কিংবা ছুটিতে ঘরে বসেও সংগ্রহ করতে
পারো বইগুলো। এসব বই পাওয়া যাবে যে কোনো বইয়ের দোকানে। অনলাইনেও সংগ্রহ করতে পারো রকমারি এবং কথাপ্রকাশ থেকে। চাইলে এই নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারো- ০১৩২৪২৫৪৬৩১। পড়ে জানিও আমাদের, কেমন লাগলো; ঠিক আছে? n
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট ঈদ র ছ ট ত রপর
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস