Samakal:
2025-07-31@06:29:04 GMT

রাঙিয়ে তোলো ঈদের ছুটি...

Published: 28th, March 2025 GMT

রাঙিয়ে তোলো ঈদের ছুটি...

ফড়িং সোনা, ঈদের ছুটি কাটাতে কেউ যাচ্ছো গ্রামে, কেউবা দর্শনীয় কোনো স্থানে। কেউ আবার দেশের বাইরে। এই ঈদের ছুটিকে আরও রাঙিয়ে তুলতে পারো গল্পের বইয়ের সঙ্গে। শৈশব প্রকাশ থেকে প্রকাশিত এমন কিছু মন রাঙানো বইয়ের খোঁজ দিচ্ছেন আশিক মুস্তাফা

স্কুলে ছুটির ঘণ্টা পড়েছে সে কবে! তা ঈদে কই যাচ্ছো? নিশ্চয় কেউ যাচ্ছো বাড়ি, কেউ আবার ঠিক করেছো দর্শনীয় স্থানে ঘুরে দেখার। কেউ আবার দেশের বাইরে। বলি, তোমাদের মতো জুটুন মামাও ঘুরতে যায়। সুযোগ পেলেই তার মন যেন পালাই পালাই করে! কিছুদিন আগের কথা। জুটুন মামা গেলো সুন্দরবন। যাওয়ার আগে অরণ্যদের কথা দিয়ে গেলো তাদের জন্য একটি বাঘের বাচ্চা নিয়ে আসবে। সেই বাচ্চার গলায় দড়ি দিয়ে তারা পাড়ায় ঘুরবে! এসব শুনে অরণ্যরা টিফিনের টাকা জমিয়ে জুটুন মামাকে একটা বাঘের টিশার্ট বানিয়ে দিল। জুটুন মামাও সেই ভাব নিয়ে গেলো সুন্দরবন। বনেই নাকি ঘর তুলে থাকবেন। কিন্তু কী হলো? সেই জুটুন মামাই নাকি খেয়েছেন বাঘের থাবড়া। তারপর? তারপর তো একেবারে অজ্ঞান! জ্ঞান ফেরার পর কী হলো? সে আমি বলতে পারবো না বাপু। জুটুন মামার ঘটনা তো এই সেদিনের। এবার শোনো অনেক অনেক আগের কথা। স্পেন দেশে ছিল এক ষাঁড়। নাম ফার্ডিনান্ড। অন্য যেসব ষাঁড়ের সঙ্গে সে থাকতো সেগুলো সব লাফাতো, ঝাঁপাতো, দৌড়াতো, মাথাগুলো এক করে গুঁতোগুঁতি করতো। ফার্ডিনান্ড সেসবের কিছুই করতো না। কেবলই চুপচাপ বসে ফুলের ঘ্রাণ নেওয়াই পছন্দ ছিল তার। দূরে চারণভূমিতে একটা কর্কগাছের নিচে প্রিয় একটা জায়গা ছিল তার। ওটাই ছিল তার পছন্দের গাছ। সেটির নিচেই সারাদিন বসে থাকতো আর ফুলের ঘ্রাণ নিতো সে। তারপর কী হলো?   তারপরের ঘটনা তোমরাই পড়ে নাও। বলবে কোথায়? বলি ‘জুটুন মামার বাঘযাত্রা’ এবং ‘গল্পটা ফার্ডিনান্ডের’ বইয়ে। কেবল এই দুটি গল্প নয়; এমন আরও অনেক অনেক মজার গল্প পাবে ‘সেকেন্ড নিয়ে তুলকালাম’, ম্যাওয়ের কত সাহস’, ‘ভাগ্য জয় করল তারা’, ‘কে তোমার সুপার শক্তিশালী বন্ধু’ এবং ‘রিয়ানা ও বুড়ো মামা’ বইয়ে। 
এই বইগুলোসহ আরও এত্তো এত্তো বই কেবল তোমাদের জন্যই লেখা। এসব বইয়ে গল্পগুলো পড়লে মনে হবে তোমার আশপাশের কোনো ঘটনা কিংবা তোমার প্রিয় প্রাণীকে নিয়ে লেখা। আবার তুমি যা ভাবো তাও খুঁজে পেতে পারো এই বইগুলোতে। যারা এই বইগুলো লিখেছেন তারা এতো সহজ ভাষায় লিখেছেন, বুঝতে কোনো কষ্টই হবে না তোমাদের। আরেকটা মজার বিষয় হচ্ছে, তোমরা ভাবনায় যেসব চরিত্রের সঙ্গে ওঠাবসা করো সেসব চরিত্র ধরে এনে যেন লেখা হয়েছে গল্পগুলো। ফলে গল্পগুলো আরও সহজে বুঝতে পারবে তোমরা। রঙিন এই বইগুলো তোমাদের মতো ছোট্টমোট্ট অনেক পণ্ডিতের ভাবনাকে রাঙিয়ে তুলছে। তাই বলছিলাম কি, ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে শৈশব প্রকাশের এই বইগুলো সংগ্রহ করে ইচ্ছেমতো ছুটিকে রাঙিয়ে তুলতে পারো। 
কিংবা ছুটিতে ঘরে বসেও সংগ্রহ করতে 
পারো বইগুলো। এসব বই পাওয়া যাবে যে কোনো বইয়ের দোকানে। অনলাইনেও সংগ্রহ করতে পারো রকমারি এবং কথাপ্রকাশ থেকে। চাইলে এই নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারো- ০১৩২৪২৫৪৬৩১। পড়ে জানিও আমাদের, কেমন লাগলো; ঠিক আছে? n

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট ঈদ র ছ ট ত রপর

এছাড়াও পড়ুন:

এক দশকে ১ লাখ হেক্টর বনভূমি কমেছে 

দেশে এক দশকে বনভূমি হ্রাস পেয়েছে ১ লাখ ১ হাজার হেক্টর, যা ঢাকা শহরের আয়তনের প্রায় সাড়ে তিন গুণ। গত এক দশকে দেশ থেকে হারিয়ে গেছে ৬৪ প্রজাতির গাছ।

সারা দেশে বনাঞ্চলে যে পরিমাণ গাছ আছে, গ্রামাঞ্চলে গাছের সংখ্যা তার চেয়ে বেশি। তবে গ্রামে গাছের ঘনত্ব কম। আর বন উজাড় বেশি হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলে। সেখানে একমুখী প্রজাতির ফসল চাষের প্রসার ও সড়ক সম্প্রসারণের কারণে বন উজাড় হচ্ছে।

বনের সার্বিক চিত্র জানতে ২০২৪ সালে বন অধিদপ্তরের করা জাতীয় বন জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

পার্বত্য অঞ্চলে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা একটা পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছি। বান্দরবানের লামা অঞ্চল দিয়ে ফরেস্ট রিস্টোরেশনের (বন পুনরুদ্ধার) কাজ শুরু করব আমরা।সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় 

২০১৫ সালে জাতীয় বন জরিপে বন আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সেটি এখন কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১২ দশমিক ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক বন জরিপে দেশে বনভূমি আছে ১৭ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর। আগের বন জরিপে যেটির পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর।

জানতে চাইলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পার্বত্য অঞ্চলে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। সেটাকে মাথায় রেখে আমরা একটা পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছি। বান্দরবানের লামা অঞ্চল দিয়ে ফরেস্ট রিস্টোরেশনের (বন পুনরুদ্ধার) কাজ শুরু করব আমরা।’

‘জীববৈচিত্র্য রক্ষা, অবক্ষয়িত বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা’র আহ্বান জানিয়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৯৭২ সালে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক দিবসের মর্যাদা দেয়।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ফাওয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিকভাবে বন উজাড়ীকরণের হার ১ দশমিক ১ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে সেটি ২ দশমিক ৬ শতাংশ।

বন অধিদপ্তরের ২০টি দল মাঠপর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করে ২০২৪ সালের মার্চে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তাদের তথ্য সংগ্রহ শেষ হয়। উপকূলীয় বন, শালবন, সুন্দরবন, পার্বত্যাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকায় মোট ১ হাজার ৮৫৮টি নমুনা প্লটের ভিত্তিতে এ জরিপের ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে।

জরিপে দেশে প্রতি হেক্টরে গাছের ঘনত্ব পাওয়া গেছে ১১৭টি। সবচেয়ে বেশি গাছের ঘনত্ব আছে সুন্দরবনে। এখানে গাছের ঘনত্ব প্রতি হেক্টরে ৭০২টি। বনাঞ্চলের চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় গাছের ঘনত্ব কম হলেও মোট গাছের পরিমাণ বেশি। গ্রামীণ এলাকায় মোট গাছের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটি।

২০১৫ সালের বন জরিপে গাছের সংখ্যা ছিল ১৬৯ কোটি। সাম্প্রতিক জরিপে সেটা কিছুটা কমে হয়েছে ১৫৭ কোটি। গত এক দশকে হ্রাস পাওয়া গাছের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। জরিপে সারা দেশে ৩২৬টি গাছের প্রজাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৪২টি প্রজাতি পাওয়া গেছে পার্বত্যাঞ্চলে। সুন্দরবনে পাওয়া গেছে ২২ প্রজাতির গাছ। এর আগে বন জরিপে (২০১৫) ৩৯০ প্রজাতির গাছ শনাক্ত করেছিল বন অধিদপ্তর। গত এক দশকে হারিয়ে গেছে ৬৪ প্রজাতির বৃক্ষ।

কেন কমছে পার্বত্যাঞ্চলের বন

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটি পরিচালিত এক গবেষণায় পার্বত্যাঞ্চল বাংলাদেশের মোট বন আচ্ছাদনের ৪০ শতাংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে দ্রুত প্রসার ঘটছে অর্থকরি ফলের চাষ (হর্টিকালচার) ও একমুখী প্রজাতির বনায়ন (মনোকালচার), যেমন রাবারবাগান।

জানতে চাইলে জাতীয় বন জরিপের সঙ্গে যুক্ত থাকা বন অধিদপ্তরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) জহির ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বৈধ ও অবৈধভাবে বন উজাড় হয়ে আসছে। এখানে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বনায়ন করা যায় না। যার কারণে এখানে বনভূমি হ্রাস পাওয়ার পরিমাণ বেশি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক কামাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বন বিভাগ কিছু করতে পারে না। পাহাড়িরা কিছু গামার আর সেগুনগাছের বাগান করেন। পুরো পার্বত্য অঞ্চলে সড়ক সম্প্রসারণ হয়েছে গত কয়েক দশকে। যেমন সীমান্ত রোড হয়েছে।

কামাল হোসাইন বলেন, এ ছাড়া এখানে বিনোদনকেন্দ্র ও রিসোর্টের সংখ্যা বাড়ছে। এটা একটা দিক। অন্যদিকে অনেক প্রভাবশালী এখন ড্রাগন, কাজু ও আমের চাষ করছেন প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে। এ অঞ্চলের বনের ওপর বহুমুখী চাপের কারণে এখানে বনাঞ্চল হ্রাস পাওয়ার হার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বেশি।

কামাল হোসাইন আক্ষেপ করে বলেন, ‘কেউ বনকে ভালোবাসে না। মানুষের লোভের শিকার হয়েছে এখানকার প্রাকৃতিক বন। এটাই আমাদের সর্বনাশ করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঘ রক্ষায় সুন্দরবনের চারপাশে হবে সুরক্ষাবলয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগের আহ্বান উপদেষ্টার 
  • বাঙালির বাঘ সংস্কৃতি: ‘যে বনে বাঘ নেই সে বনে শিয়ালই রাজা!’
  • বাঘ বাঁচলে সুন্দরবন বাঁচবে
  • পাচারকারীসহ আরও কিছু কারণে হুমকির মুখে সুন্দরবনের বাঘ
  • এক দশকে ১ লাখ হেক্টর বনভূমি কমেছে