গ্রিনল্যান্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ্যে আনলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, ‘বিশ্বশান্তির’ জন্য গ্রিনল্যান্ড দখল করা প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের শান্তির বিষয় নয়, বরং পুরো বিশ্বের নিরাপত্তার প্রশ্ন।’ খবর আলজাজিরার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা শুধু নিজেদের কথা ভাবছি না, আমরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার কথা বলছি। যদি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব না নেয়, তবে চীন ও রাশিয়া সেই সুযোগ গ্রহণ করবে। তাই গ্রিনল্যান্ডের মতো কৌশলগত অঞ্চল আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রয়োজন।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, তার স্ত্রী এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা একদিনের সফরে গ্রিনল্যান্ডের মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। সেখানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন।

ভ্যান্স বলেন, ‘আমি আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমাদের নেতৃত্ব না থাকলে চীন ও রাশিয়া সেই শূন্যস্থান পূরণ করবে।’

ভ্যান্স আরও বলেন, ‘আমরা গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সমালোচনা করছি না। তারা অসাধারণ মানুষ এবং তাদের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, ডেনমার্কের নেতৃত্ব গ্রিনল্যান্ডের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করেনি। এটি অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের নীতি হলো, এই পরিবর্তন নিশ্চিত করা।’

এই সফরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট এবং ভ্যান্সের স্ত্রী উষা ভ্যান্সও উপস্থিত ছিলেন। সফরের অংশ হিসেবে তারা মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন আগেও গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে এই বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পনা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং তারা কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে পারে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন পণ্যের জন্য বাজার আরও উন্মুক্ত করতে প্রস্তুত ভিয়েতনাম

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য রপ্তানির জন্য ভিয়েতনাম নিজেদের বাজার আরও উন্মুক্ত করতে ও অতিরিক্ত প্রণোদনা দিতে প্রস্তুত। দেশটির শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং দিয়েন গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন সিনেটর রজার মার্শালের সঙ্গে এক বৈঠকে এ তথ্য জানান।

ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং জানান, পার্টির সাধারণ সম্পাদক তো লাম ও প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিনের বার্তা তিনি সিনেটর রজার মার্শালের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বার্তায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদারে ভিয়েতনাম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং উভয় দেশের জনগণ ও পারস্পরিক ব্যবসার স্বার্থে দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহী। খবর ভিয়েতনাম নিউজের

চলমান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে হং দিয়েন বলেন, আলোচনায় ভিয়েতনাম বরাবরের মতোই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানে আছে। তিনি জানান, আলোচনার ভিত্তি হবে পরস্পরের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, স্বার্থের ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং উভয় দেশের উন্নয়ন।

হং দিয়েন আশা প্রকাশ করেন, সিনেটর রজার মার্শাল যেহেতু রিপাবলিকান পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং বাণিজ্য, কৃষি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ সেহেতু তিনি আলোচনার সময় নিজ দেশের (ভিয়েতনাম) পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি মার্কিন সরকার, বিশেষ করে কানসাস রাজ্যের সঙ্গে ভিয়েতনামের সহযোগিতা আরও জোরদারে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে। কারণ, কৃষিসহ মহাকাশপ্রযুক্তি ও জীবপ্রযুক্তিতে কানসাসের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে।

মার্কিন সিনেটর রজার মার্শাল ভিয়েতনামের আন্তরিকতা, অগ্রগামী মনোভাব ও সদিচ্ছার প্রশংসা করেন। তিনি জানান, আলোচনার বিষয়টি তিনি শিগগিরই প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিপরিষদের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের সামনে উপস্থাপন করবেন। আলোচনায় উভয় দেশের জন্য ইতিবাচক ফলাফল আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মার্শাল।

একই দিনে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হং দিয়েন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত সুপারশপ ওয়ালমার্ট এবং অ্যাথলেটিক বা খেলাধুলার জুতা ও ক্রীড়াসামগ্রীর প্রতিষ্ঠান নাইকির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। এই দুটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ভিয়েতনামে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

নাইকির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে গুয়েন হং দিয়েন তাঁর দেশে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল ও দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির প্রশংসা করেন। বর্তমানে নাইকির বিশ্বব্যাপী জুতার প্রায় ৫০ শতাংশই ভিয়েতনামে তৈরি হয়, যা সরাসরি ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্টের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী দিয়েন বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামি পণ্যের প্রচারে ওয়ালমার্টের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি প্রস্তাব দেন, ওয়ালমার্ট যেন উচ্চমূল্যের ও পরিবেশবান্ধব পণ্যের ক্রয় বাড়ায় এবং ভিয়েতনামে একটি কৌশলগত সোর্সিং হাব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিবেচনা করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুধু পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস নয়, উদ্দেশ্য আরও বেশি কিছু
  • স্টিভ জবসের যে অভ্যাস অনুকরণ না করার পরামর্শ দিলেন পিক্সারের শীর্ষ কর্মকর্তা
  • বিদেশি কোম্পানিকে বন্দর ব্যবস্থাপনার ইজারা দেওয়ার ঝুঁকিগুলো কী
  • মার্কিন পণ্যের জন্য বাজার আরও উন্মুক্ত করতে প্রস্তুত ভিয়েতনাম