Samakal:
2025-11-03@11:18:40 GMT

বিভেদের প্রাচীর ভেঙে যাক

Published: 29th, March 2025 GMT

বিভেদের প্রাচীর ভেঙে যাক

ঈদুল ফিতর মুসলমানদের জীবনে একটি অনন্য দিন। টানা এক মাস রোজা পালনের পর আসে এই ঈদ। পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখার মাধ্যমে নিজেদের পাপ ও পাশবিক প্রবৃত্তি দমন করে উৎসব হিসেবে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর।

ইসলামী সংস্কৃতির অনন্য উৎসব ঈদ। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত হিসেবে পালিত হয় এই উৎসব। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে  ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নিচু, সাদা-কালো সব ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনার মাধ্যমে মুসলিম ভ্রাতৃত্বকে সুদৃঢ় করা।  

ইসলামে দুটি ঈদের কথা বলা হয়েছে। একটি ঈদুল ফিতর; যা রমজানের রোজা পূর্ণ করে পালন করা হয়। অন্যটি ঈদুল আজহা, যা হজ বা কোরবানি উপলক্ষে পালন করা হয়। ঈদ মানে আনন্দ, খুশি। তবে ঈদের সঠিক অর্থ বারবার আসা। ঈদ যেহেতু সময়ের ব্যবধানে পৃথিবীতে বারবার আসে সেহেতু ঈদকে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। ঈদ পর্বটি নিয়ে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা রয়েছে। 
মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে সরাসরি রহমত ও বরকতময় দিন হিসেবে ঈদ উৎসব মুসলমানদের প্রতি নির্দেশিত হয়েছে। মানুষে মানুষে যে বিভেদের প্রাচীর তৈরি হয়, এ উৎসব তাকে ভেঙে চুরমার করে দেয়। ধনী-গরিব, আশরাফ-আতরাফ, রাজা-প্রজা, মালিক-শ্রমিকের ভেদাভেদ ভুলে মানুষ সেদিন একাকার হয়ে যায়। ঈদের দিনটি একজন মুমিনের জন্য বড় আনন্দের দিন। পরম প্রাপ্তির দিন।

হজরত সাদ বিন আওস আনসারী (রা.

) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন ফেরেশতারা রাস্তার প্রতিটি গেটে দাঁড়িয়ে যায় এবং মুসলমানদের ডেকে বলে, ‘হে মুসলমানগণ! তোমরা তোমাদের সেই পরম দাতা প্রভুর দিকে চলো, যিনি নিজ কৃপায় তোমাদের শান্তি ও মঙ্গলের শিক্ষা দেন, তার ওপর আমল করার শক্তি দেন, অতঃপর এর ওপরই তোমাদের পুরস্কৃত করেন। ঈদ উৎসব শুরু হয় মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণার মধ্য দিয়ে। তা সালাতুল ঈদ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ঘোষিত হতে থাকে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈদের চাঁদ দেখবে তার উচিত পরের দিন ইমাম ঈদগাহে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তাকবির পড়া।’ মুসলিম সমাজের প্রত্যেক মানুষ–গরিব দুঃখী অসহায়–সবাই সমানভাবে এতে অংশ নিতে পারে। সুতরাং ঈদের এ উৎসব শুধু আনন্দ উৎসব নয়, বরং এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ উৎসব; যা ইবাদতের শামিল।

সাধারণত আমাদের দেশে ঈদ উৎসবে ঈদের জামাত ছাড়া ভিন্ন কোনো কর্মসূচি খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এবারের ঈদকে নগরবাসীর জন্য আরও সুন্দর ও উপভোগ্য করতে সরকার নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঈদ মিছিলের বিষয়ে আমরা কমবেশি সবাই অবগত আছি। সুলতানি আমল-পরবর্তী ব্রিটিশ আমলেও ঈদ মিছিলের আয়োজন করা হতো। এই সংস্কৃতিকে এবার রিভাইভ করার উদ্যোগ নিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। গ্রামের ঈদগাহের পাশে যেমন ছোট করে মেলা বসে, ঠিক তেমনি মেলা থাকবে দিনব্যাপী। ঈদের জামাতের পরই হবে ঈদ আনন্দ মিছিল। মিছিলটি জামাতের স্থান থেকে শুরু হয়ে সংসদ ভবনের সামনে এসে শেষ হবে।
আমরা সারাদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও উপজেলা সদর থেকেও এ ধরনের ঈদ আনন্দ শোভাযাত্রা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে উপভোগ্য করতে পারি। সমাজের মানুষের মধ্যে ঈদ একটি পবিত্র সম্পর্ক গড়ে তোলে। পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতির শিক্ষা দেয়। তাই আসুন, নতুন বাংলাদেশে নতুনভাবে আমাদের ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমিন।

ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ উৎসব ম সলম আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক