প্রতিবছরের ন্যায় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনটি ঈদের জামাত সম্পন্ন হয়েছে। কারাবন্দিদের জন্য সকাল ৯টায় এবং কারারক্ষীদের জন্য সকাল আটটায় পরপর ২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত নিয়মিত খাবারের সঙ্গে ১৫০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে সব বন্দিদের জন্য স্পেশাল খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঈদের দিনে। এছাড়াও ঈদে বাড়তি আনন্দ দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

ঈদের দিন দুপুরে সমকালের সঙ্গে কথা হয় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো.

আমিরুল ইসলামের। তিনি জানান, আজ পর্যন্ত ময়মনসিংহে সর্বমোট বন্দির সংখ্যা ১ হাজার ৯৫০ জন। ঈদের দিনে সব বন্দির জন্য একই খাবারের মেনু তৈরি করা হয়েছে। 

সারা বছর একজন বন্দি সরকারি খাবার হিসেবে সকালে হালুয়া, রুটি ও ডিম পেয়ে থাকেন। দুপুরে বরাদ্দ থাকে ভাত, ডাল ও সবজি। আর রাতের খাবার হিসেবে থাকে ভাত, ডাল, মাছ অথবা মাংস।

আর ঈদের দিনে বন্দীরা সকালে পেয়েছেন পায়েস, সেমাই ও মুড়ি। দুপুরের মেনুতে ছিল পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরু অথবা খাসির মাংস,  সালাদ, কোমল পানীয়, মিষ্টি ও পান। রাতের মেনুতে থাকছে ভাত, আলুর দম, মাছ ভাজি ও সবজি। 

ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দিদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও তার পরের দিন কারাবন্দিরা স্বাভাবিক নিয়মের চেয়ে পাঁচ মিনিট বেশি কথা বলতে পারবেন টেলিফোনে। এতে হাসি ফুটেছে সব বন্দীদের মুখে। 

সিনিয়র জেল সুপার জানান, ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে কোনও ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি নেই। সব বন্দিদের জন্য ঈদের দিন সমান সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কারাবন্দিরা এদিন বাসা থেকে রান্না করে আনা খাবার খেতে পারেন। 

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অনেক আওয়ামী লীগ নেতাদের ঠাঁই হয় দেশের বিভিন্ন কারাগারে। বর্তমানে তাদের একমাত্র ভরসা পরিবারের ওপর।

আওয়ামী লীগের এক কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দেশে নানান জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমার ভাইয়েরা কারাগারে আছেন। এখন কেউ কারাগারে তাদের খোঁজ নেয় না, আমরা ফোন দিলেও ধরে না। অথচ তারা বিদেশে বসে রাজকীয় ঈদ উদযাপন করে সেলফি দিচ্ছেন।

এদিকে কারাগারের বন্দিদের মতোই সারাজীবন কারাগারেই ঈদ করতে হয় কারারক্ষীদের। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. আব্দুল কাদির বলেন, কারাগারেই আমরা ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করি। বিষয়টি আমার কাছে খারাপ লাগে না। চাকরিতে যোগদানের পরে কোনও ঈদই বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে করা হয়নি। বাড়িতে গেলে হয়তো ১৫-২০ জন মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। কিন্তু কারাগারে হাজারো বন্দিদের সঙ্গে মিলেমিশে আমরা ঈদ করি। বেশিরভাগ বন্দিই এখানে অসচ্ছল। ঈদের দিনে তাদের সবাইকে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করে যে তৃপ্তি পাই, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। 

সিনিয়র জেল সুপার মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, কারাগারের বন্দিরাও সমাজের অংশ, তাদের জন্য ঈদের আনন্দ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। কারারক্ষী এবং কারাবন্দি কেউ যেহেতু ঈদে বাড়ি যেতে পারে না সেটা বিবেচনা করে আমরা সবাই মিলে একটা পরিবারের মত ঈদ উদযাপন করি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক র বন দ ঈদ র দ ন বন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত

ইরানের রাজধানী তেহরানে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ ‍জুন) বিকেলে চালানো এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার ডেপুটি হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন।

রবিবার রাতে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ও সংবাদ সংস্থাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত

ইরানে আবারো হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরো জানিয়েছে, তেহরানে ইসরায়েলের নতুন হামলায় আইআরজিসির তৃতীয় ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসেন বাঘেরিও নিহত হয়েছেন।

এর আগে, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের প্রথম হামলায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসির কমান্ডার হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং অন্তত ছয় জন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল ইরান। 

রবিবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার ইরানজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৯০০ জন। হতাহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ জন নারী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ