ঈদ বোনাসের নামে বাড়তি ভাড়া দাবি, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
Published: 31st, March 2025 GMT
এক মাস সিয়াম সাধনার পর সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছেড়েছেন অনেক মানুষ। তাই, ঈদের দিনে রাজধানীর সড়কগুলো বেশ ফাঁকা। সড়কে গণপরিবহন কম। এ সুযোগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার চালকরা ঈদ বোনাসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় কোনো যানজট নেই। রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মূল রাস্তা থেকে শুরু করে অলি-গলি।
মিরপুর মাজার রোড থেকে সংসদ ভবন এলাকায় যাবেন রবিন হোসেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আটটি সিএনজি অটোরিকশার চালকের সঙ্গে কথা বলেছি। বেশি ভাড়া না দেওয়ায় কেউ যেতে চাইছেন না। রাস্তা ফাঁকা, তবু ৩০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা চাচ্ছেন চালকরা। ৩৫০ টাকা দিতে চেয়েছি, তবু তারা যাবেন না।
সিএনজি অটোরিকশার চালক রোহান বলেন, সবার ছুটি আছে, আমাদের ছুটি নাই। ঘরে ছেলে-মেয়ে রেখে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছি। ঈদের সময় একটু বোনাস না দিলে চলবে কীভাবে?
এদিকে, মোড়ে মোড়ে লোকাল বাস থাকলেও যাত্রী কম। ফলে, একই জায়গায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে বাসগুলোকে।
মাজার রোড এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক রকির সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘরে ছেলে-মেয়ে চার জন আছি। ঈদের দিন দুইডা টাকা বেশি না দিলে কী করে চলমু। চুয়াডাঙ্গা জেলায় আমার বাড়ি। রিকশা চালিয়ে বাড়িতে টাকা পাঠাই, মামা; সেই টাকায় সংসার চলে।
ঢাকার রাস্তাগুলোতে যানবাহনের চাপ কম থাকায় ব্যস্ততা নেই ট্রাফিক পুলিশের। ফাঁকা রাস্তায় এলোমেলোভাবে চলছে যানবাহন।
ঢাকা/এএএম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে