সারা বছর ঢাকা-কলকাতা ছুটেই সময় কাটে জয়া আহসানের। ঈদ উৎসব উপলক্ষে খানিকটা নিশ্চিন্তে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পান। এখনো পরিবার নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে জয়া আহসান অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘জিম্মি’। আশফাক নিপুণ নির্মিত এ সিরিজ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে দেখা যাচ্ছে। মুক্তির পর বেশ সাড়াও ফেলেছি এটি।
‘জিম্মি’ সিরিজ দিয়ে ওটিটিতে অভিষেক হলো জয়া আহসানের। এতটা দেরিতে এই মাধ্যমে কাজ করার কারণ ব্যাখ্যা করে জয়া বলেন, “আমরা সবাই খানিকটা লোভী, বড় পর্দার কাজগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছিলাম। মাঝে মনে হয়েছিল ওটিটিতে কাজ করা উচিত, প্রস্তাবও আসছিল। কিন্তু ঠিক চরিত্রের অপেক্ষায় ছিলাম। হইচই প্ল্যাটফর্মের ‘জিম্মি’ সেই সুযোগটা করে দিয়েছে। পাশাপাশি (আশফাক) নিপুণ আমার খুব পছন্দের পরিচালক। তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দারুণ। সব মিলিয়ে এটা একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। সে জন্যই হয়েতো এক্সাইটমেন্ট অনেকটা বাচ্চাদের মতো।”
আরো পড়ুন:
‘কুইন অব দ্য ইয়ার’ জয়া
জয়া আহসান আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন: আশফাক নিপুণ
‘জিম্মি’ সিরিজের চরিত্রে অভিনয়ের সম্মতি দেওয়ার বিষয়ে জয়া আহসান বলেন, “আসলে মহিলা চরিত্রদের যখনই কাস্ট করা হয়, সাধারণত ব্ল্যাক বা হোয়াইট শেডে ফেলে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। গ্রে এরিয়াটাকে একটু এড়িয়ে চলা হয়। মানুষের সাতটি রিপু, বিশেষ করে লোভ যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে কাহিনিতে, সেটা আমাকে আকর্ষণ করেছিল। আর মানুষ কিন্তু এই চরিত্রটিকে ভালোবাসছেন।”
নারী প্রধান কাজের সুযোগ কী কম? এমন প্রশ্নের জবাবে জয়া আহসান বলেন, “হ্যাঁ। সেই সুযোগটা সত্যিই কম। কলকাতায় সুযোগ পেলেও বাংলাদেশে সেটা খুবই কম। যেমন অতনুদা (অতনু ঘোষ) ‘রবিবার’, ‘বিনিসুতোয়’-এ কাজের সুযোগ দিলেন, টনিদা (অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী) দিলেন ‘ডিয়ার মা’-এর মতো কাজ। এ রকম বেশ কিছু কাজ কলকাতায় করলেও বাংলাদেশে তেমনটা ঠিক পাই না। নারী কেন্দ্রিক চরিত্র দিয়ে সিনেমা হলে মানুষকে নিয়ে আসার চেষ্টার দিকে বাংলাদেশে এখনো খানিকটা খামতি রয়েছে। ‘ডুবসাঁতার’ পেয়েছি ঠিকই, তবে নিজের জন্মস্থানে আর একটু বেশি এই ধরনের কাজ পাওয়া উচিত। আমি একটু বেশি ডিজার্ভ করি।”
ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার উদাহরণ টেনে জয়া আহসান বলেন, “এবারের ঈদে বাংলাদেশে পাঁচটা সিনেমা বড় পর্দায় মুক্তি পেয়েছে। তার বেশিরভাগই প্রচণ্ডভাবে পুরুষকেন্দ্রীক চরিত্রদের নিয়ে গল্প। সেগুলোও ভালো ফল করছে। তবে সিনেমা তো সমাজের আয়না। তাই শুধু মেল প্রোটাগনিস্টের সাহায্যে হল ভরানোর ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নারীকেন্দ্রীক সিনেমাকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। দায়িত্ব নিয়ে সেই বদলটা আমাদের সবাইকেই আনতে হবে।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জয় আহস ন চলচ চ ত র আহস ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।