সাভারে দিনের বেলায় যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে ছিনতাইকারীরা নগদ টাকা, সোনার অলংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুট করেছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক নারী।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইতিহাস পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে।

সাভার মডেল থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাসে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ করে মোছা.

টুনি নামের এক নারী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বাসের যাত্রীরা চালক ও চালকের সহকারীকে বাসসহ পুলিশের কাছে দিয়েছে।

ভুক্তভোগী যাত্রী টুনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা দুইটার দিকে চন্দ্রা থেকে বাসটি ছাড়ে। এরপর সাভারের ব্যাংক টাউন ব্রিজের কাছ থেকে দুজন ছিনতাইকারী বাসে ওঠেন। বাসে ওঠার পরপরই তাঁরা ছুরি বের করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা, সোনার চেইন, কানের দুল, মুঠোফোন কেড়ে নেন। বাসে আগে থেকে একজন ছিনতাইকারী ছিলেন। তিনি ওই দুজনের সঙ্গে ছিনতাইয়ে অংশ নেন। ছিনতাই করার আগে তাঁকে বাসের চালকের পাশে বসে হাসাহাসি ও গল্পগুজব করতে দেখেছেন তিনি।

ওই যাত্রী বলেন, বাসে ৩০-৪০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। বেশির ভাগই নারী। কয়েকজন পুরুষ যাত্রী ছিনতাইকারীদের বাধা দিতে চাইলে এক যাত্রীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন ছিনতাইকারীরা। ফুলবাড়িয়া এলাকায় বাস থামিয়ে ছিনতাইকারীরা নেমে যান। এ ঘটনায় রাত আটটার দিকে সাভার মডেল থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দেন।
আরেক ভুক্তভোগী রিপন সরকার বলেন, ছিনতাইকারীরা ছুরি বের করে যাত্রীদের চুপ থাকতে বলেন। এরপর ধারালো ছুরির মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার অলংকার ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে ফুলবাড়িয়া এলাকায় নেমে যান। ছিনতাইকারীরা তাঁর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন বলে তিনি দাবি করেন।

ইতিহাস পরিবহনের পরিচালক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনজন লোক অস্ত্রের মুখে তাঁদের নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করেছেন বলে জানান যাত্রীরা। বাসে ৪০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন, তাঁরা কেউ ছিনতাইকারীদের বাধা দেননি। দিনের বেলায় এতগুলো মানুষের সামনে এমন ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তাটা থাকল কই? এ ঘটনায় তিনি সাভার মডেল থানায় মামলায় করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে, এমন অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

কমিটি নেই, সবাই নেতা

কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর। 
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি। 
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। 
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু। 
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ। 
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব। 
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি। 
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স‌চিবাল‌য়ে কর্মচারী‌দের বি‌ক্ষোভ, চল‌বে মঙ্গলবারও 
  • পুরনো স্বাদের ঝুরা মাংসের
  • ভাত খাওয়ার সময় কেন ভাতটাই পরে খেতে বলেন চিকিৎসকেরা?
  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা