সাভারে দিনের বেলায় যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ছিনতাই
Published: 5th, April 2025 GMT
সাভারে দিনের বেলায় যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে ছিনতাইকারীরা নগদ টাকা, সোনার অলংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুট করেছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ইতিহাস পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে।
সাভার মডেল থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাসে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ করে মোছা.
ভুক্তভোগী যাত্রী টুনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বেলা দুইটার দিকে চন্দ্রা থেকে বাসটি ছাড়ে। এরপর সাভারের ব্যাংক টাউন ব্রিজের কাছ থেকে দুজন ছিনতাইকারী বাসে ওঠেন। বাসে ওঠার পরপরই তাঁরা ছুরি বের করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা, সোনার চেইন, কানের দুল, মুঠোফোন কেড়ে নেন। বাসে আগে থেকে একজন ছিনতাইকারী ছিলেন। তিনি ওই দুজনের সঙ্গে ছিনতাইয়ে অংশ নেন। ছিনতাই করার আগে তাঁকে বাসের চালকের পাশে বসে হাসাহাসি ও গল্পগুজব করতে দেখেছেন তিনি।
ওই যাত্রী বলেন, বাসে ৩০-৪০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। বেশির ভাগই নারী। কয়েকজন পুরুষ যাত্রী ছিনতাইকারীদের বাধা দিতে চাইলে এক যাত্রীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন ছিনতাইকারীরা। ফুলবাড়িয়া এলাকায় বাস থামিয়ে ছিনতাইকারীরা নেমে যান। এ ঘটনায় রাত আটটার দিকে সাভার মডেল থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দেন।
আরেক ভুক্তভোগী রিপন সরকার বলেন, ছিনতাইকারীরা ছুরি বের করে যাত্রীদের চুপ থাকতে বলেন। এরপর ধারালো ছুরির মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে নগদ টাকা, সোনার অলংকার ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে ফুলবাড়িয়া এলাকায় নেমে যান। ছিনতাইকারীরা তাঁর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
ইতিহাস পরিবহনের পরিচালক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনজন লোক অস্ত্রের মুখে তাঁদের নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করেছেন বলে জানান যাত্রীরা। বাসে ৪০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন, তাঁরা কেউ ছিনতাইকারীদের বাধা দেননি। দিনের বেলায় এতগুলো মানুষের সামনে এমন ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তাটা থাকল কই? এ ঘটনায় তিনি সাভার মডেল থানায় মামলায় করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, বাসে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে, এমন অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত