প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ১৫১ জন। সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় কর্তৃক ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ–স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত নন, এমন প্রার্থীদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডার পদে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদায়ন দিয়ে ১০ এপ্রিলের মধ্যে তাঁদের যোগদান করতে বলা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, ‘পদায়নকৃত শিক্ষকদের মধ্যে যদি কেউ ১০ এপ্রিলের মধ্যে চাকরিতে যোগ না দেন, তাহলে তাঁর পদায়নকৃত আদেশ বাতিল হবে।’

প্রত্যেক প্রার্থী সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর যোগদানপত্র দাখিল করবেন। শিক্ষা কর্মকর্তারা যোগদানপত্র গ্রহণ করে একটি প্রত্যয়নপত্র দেবেন। এই প্রত্যয়নপত্রসহ তিনি পদায়নকৃত বিদ্যালয়ে যোগদান করবেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর যোগদানের তারিখই চাকরিতে যোগদানের তারিখ হিসেবে গণ্য হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (প্রশিক্ষণবিহীন) নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণি হিসেবে বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রেড-১২ (টাকা ১১,৩০০-২৭,৩০০/)–তে বেতন পাবেন। চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হবে। শিক্ষানবিশকালে অযোগ্য বিবেচিত হলে কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে তাঁদের চাকরি থেকে অপসারণ করা যাবে। শিক্ষানবিশকাল সন্তোষজনক বিবেচিত হলে বিধিমোতাবেক চাকরিতে স্থায়ী করা হবে। চাকরিতে তাঁদের জ্যেষ্ঠতা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয় কর্তৃক সুপারিশকৃত মেধাতালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।

প্রধান শিক্ষকদের পদায়নকৃত বিদ্যালয়ের নাম ও ঠিকানা দেখা যাবে এই লিংকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র চ কর ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এপ্রিলে ডেঙ্গু রোগী মার্চের দ্বিগুণ

চলতি বছরের মার্চ মাসের চেয়ে সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিলে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি ছিল। গত চার মাসে দেশে যে পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, গত বছরের প্রথম চার মাসে তা হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসেও ডেঙ্গুতে এত আক্রান্ত রোগী ছিলেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ মার্চ মাসে করা জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে বাড়লেও ডেঙ্গুর শূককীট বা লার্ভার পরিমাণ বেশ কমেছে আগের জরিপের সময়ের চেয়ে। তবে এপ্রিল মাসে দেশজুড়ে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি লার্ভার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলতি মে মাসেও এমন ধারার বৃষ্টির প্রবণতা আছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা। তাঁদের কথা, যদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কমে যায়। মৃত্যুর সংখ্যাও তেমন হারেই কমে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।

সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭০১। মার্চ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৩৩৬।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের সঙ্গে এ বছরের তুলনা করলে দেখা যায়, এবার প্রতি মাসে আগের বছরের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০৪ জন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন যথাক্রমে ১ হাজার ৫৫, ৩৩৯ ও ৩১১ জন। এবার এই ৩ মাসে রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ১৬১, ৩৭৪ ও ৩৩৬।

এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন

নিছক সংখ্যা দিয়ে রোগের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করা যায় না, এমন কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংখ্যা নিঃসন্দেহে কিছু ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ