ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখল করে যেভাবে গড়ে উঠল ইসরায়েল রাষ্ট্র
Published: 7th, April 2025 GMT
‘প্রতিশ্রুত ভূমি।’ ‘মনোনীত সম্প্রদায়।’ ‘ভূমিহীন মানুষের জন্য মনুষ্যহীন ভূমি।’ পশ্চিমা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত অত্যন্ত শক্তিশালী তিনটি বয়ান, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে ইহুদিদের জন্য ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে জোরপূর্বক আধুনিক ইসরায়েল রাষ্ট্র স্থাপনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।
ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ হিব্রু বাইবেল বা তানাখ অনুসারে নবী আব্রাহামকে ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তাঁর বংশধরদের জন্য একটি ভূখণ্ড নির্দিষ্ট করা হয়েছে, যা বংশপরম্পরায় তাদের পুণ্যভূমি হিসেবেই থাকবে। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে আজ যেখানে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল, সেটি হলো সেই ভূমি, যদিও বাইবেলের আরেক বিবরণ অনুসারে এটি মিসর থেকে ইউফ্রেতিস নদীর তীর পর্যন্ত বিস্তৃত। আবার যাদের জন্য ঈশ্বর এই ভূমির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা হলো ইহুদি সম্প্রদায়, যারা এই বাইবেল অনুসারেই, মহাপ্রভুর মনোনীত সম্প্রদায় বা জাতি (চুজেন পিপল)। ঈশ্বরের সঙ্গে ইহুদিদের রয়েছে ঘনিষ্ঠতম সম্পর্ক, একমাত্র তাদের সৌভাগ্য হয়েছে ঈশ্বরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার। সে কারণেই তারা জগতের শ্রেষ্ঠতম জাতি, যারা সব অ-ইহুদিকে নিম্ন জাতের বলে মনে করে।
যেহেতু ইহুদি শুধু একটি ধর্মাদর্শই নয়, একই সঙ্গে একটি সম্প্রদায় বা জাতি, তাই অন্য ধর্মাবলম্বীদের চেয়ে ব্যতিক্রম। ইহুদিরা একই সঙ্গে ধর্ম, নৃতত্ত্ব ও সংস্কৃতি দ্বারা একসূত্রে গাঁথা। যদিও ইহুদিদের মতো খ্রিষ্টান ও মুসলমানরাও একেশ্বরবাদী ইব্রাহিমীয় ধর্মাদর্শের অনুসারী। অর্থাৎ বিশ্বের এই তিনটি প্রধান ধর্মের আদি পিতা একজনই—আব্রাহাম {বা পবিত্র কোরআন মতে হজরত ইব্রাহিম (আ.
ইহুদিরা হিব্রু সম্প্রদায় হিসেবেও পরিচিত, যেহেতু তাদের ভাষাও হিব্রু। ঈশ্বরের পছন্দের জাতি বা সম্প্রদায়ের মানুষেরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমিতেই বসবাস করবে। তারা সেটা করেও আসছিল মুসা (আ.) তাদের মিসর থেকে সিনাই উপত্যকা হয়ে কেনানে ফিরিয়ে আনার পর থেকে (খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক ১৪০০ সাল)। তবে দুই হাজার বছরের বেশি আগে (৭০ খ্রিষ্টাব্দে) রোমানরা জেরুজালেমে ইহুদিদের দ্বিতীয় মন্দির ধ্বংস করে তাদের জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেয়।
ফিলিস্তিনিরা প্রতিবছর তাই ১৫ মে তারিখটিকে ‘আল-নাকবা’ দিবস হিসেবে পালন করে। আর এ বছরই প্রথম জাতিসংঘে দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হচ্ছে।হিব্রুরা স্বভূমি থেকে উৎখাত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে। নির্বাসিত হয়েও তাদের মন পড়ে থাকে সেই প্রাচীন ভূমিতে, যেখানে রয়েছে জেরুজালেম ও ইহুদিদের দ্বিতীয় মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, আছে প্রাচীন জুদিয়া ও সামারিয়া, আছে জায়ন পাহাড়। তারা অবশ্য এটাও বিশ্বাস করত যে একসময় এই প্রতিশ্রুত ভূমিতে তারা বা তাদের উত্তরসূরিরা ফিরে আসবে। সুতরাং আজকে যে ইহুদিরা ইসরায়েলে বসবাস করছে, তারা দুই হাজার বছর আগে এই ভূমি থেকে বিতাড়িত হিব্রু সম্প্রদায়েরই বংশধর।
১৯৪৮ সালে জায়নবাদীদের হামলার পর একদল ফিলিস্তিনি গ্যালিলের একটি গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ব স কর অন স র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//