যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে লেবাননে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমন পরিস্থিতিরি মধ্যেই ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক করেছে লেবানন। 

আরব নিউজ জানিয়েছে, সোমবার (৭ এপ্রিল) বৈরুতে মার্কিন একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলী অনুসারে, ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর উদ্দেশ্য ছিল- লিটানি নদীর দক্ষিণ থেকে তাদের যোদ্ধাদের প্রত্যাহার করা এবং সেখানে অবশিষ্ট সামরিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা।

আরো পড়ুন:

এবার লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হলেন আইসিজের প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালাম

ইসরায়েলের দক্ষিণ লেবানন থেকে তাদের সমস্ত বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েল পাঁচটি অবস্থান ধরে রেখেছে, যা তারা ‘কৌশলগত’ বলে মনে করে।

সোমবার মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন পাঁচটি সীমান্ত পয়েন্ট থেকে ইসরায়েলকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চলমান সেনা উপস্থিতি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে।

অপরদিকে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার বার্তা দেওয়া হয়েছে।ওয়াশিংটন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রত্যাশা করছে। এ জন্য আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে বৈরুত।

এডওয়ার্ড গ্যাব্রিয়েলের নেতৃত্বে লেবানন বিষয়ক আমেরিকান টাস্ক ফোর্সের একটি প্রতিনিধিদল আউনকে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।

আউন বলেন,“লেবাননের রাষ্ট্রের কাঠামোর বাইরে কোনো অস্ত্র বা সশস্ত্র গোষ্ঠীর কোনো স্থান নেই।

আউন আরো বলেন, যোগাযোগ ও সংলাপের মাধ্যমে সমস্যাটির সমাধান করা দরকার কারণ শেষ পর্যন্ত হিজবুল্লাহ লেবাননের একটি অংশ। তিনি জানান,  কর্তৃপক্ষ শিগগির একটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন শুরু করবে।

আউন ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির ইসরায়েলি লঙ্ঘনের’ দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, পাঁচটি পাহাড়ের দখলে ইসরায়েলের অব্যাহত উপস্থিতি লেবাননের জন্য উপকারী হবে না এবং পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলবে। 

তিনি বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই ইসরায়েলকে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য চাপ দেওয়ার জন্য।

‘লিটানি নদীর উত্তরে লেবাননের সেনাবাহিনী শরণার্থী শিবিরের বাইরে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি শিবির ভেঙে দিয়েছে। এগুলো এখন খালি এবং সেখান পাওয়া অস্ত্রগুলো হয় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অথবা ধ্বংস করা হয়েছে।”  

আউন নিশ্চিত করেছেন যে, তার সরকারের অগ্রাধিকার হলো দক্ষিণ সীমান্তে উত্তেজনা কমানো।

আউন উল্লেখ করেন, তিন সপ্তাহ আগে তার সরকার দক্ষিণে তাদের প্রস্তুতি বাড়ানোর জন্য ৪,৫০০ সেনা নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি আমেরিকান প্রতিনিধি দলের কাছে জোর দিয়ে বলেন, লেবাননের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি হলো সংস্কার এবং অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ। আমরা এই লক্ষ্যগুলোর দিকে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বিশ্বাস তৈরি করার মতো পদক্ষেপ আমরা ইতোমধ্যেই শুরু করেছি।

মার্কিন প্রতিনিধি গ্যাব্রিয়েল লেবানিজ সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টার উল্লেখযোগ্য অবদান এবং প্রেসিডেন্টের প্রশংসনীয় কাজের বিষয়ে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমি বুঝতে পেরেছি যে এতে আপনার অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং এখনও অনেক কাজ রয়েছে যা সম্পূর্ণ করা দরকার, যেগুলো সম্পর্কে আমাদের সচেতন করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি এগুলো সম্পন্ন করা হবে, তত দ্রুত আমরা আপনাকে সহায়তা করতে পারব।

লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এই বৈঠকের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। 

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ব নন ল ব নন র প ইসর য় ল র জন য ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ