চীনা পণ্যের ওপর আরো ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (৭ এপ্রিল) ট্রাম্প বলেছেন, “চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপ করা ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আগামীকালের (মঙ্গলবার) মধ্যে প্রত্যাহার না করে, তাহলে দেশটির ওপর আরো ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে।”

হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে চীনা পণ্যে মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ থাকবে।

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সরাসরি পারমাণবিক আলোচনায় বসছে: ট্রাম্প

ইউএসটিআরকে বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠি
যুক্তরাষ্ট্রের আরো ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপায়। 

এই ঘটনায় এবার চীনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন- চীনকে মঙ্গলবারের মধ্যে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে আরো ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে চীনের পণ্যে। 

সোমবার ট্রাম্প বলেন, “আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কোনো দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও অনেক বেশি হারে শুল্কের মুখোমুখি হবে।”

এদিকে, এর প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, “চীনকে চাপ বা হুমকি দিয়ে কখনোই লাভ হবে না।”

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে তারা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনোই মেনে নেবে না।

চীনা পণ্যের ওপর আরো ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিকে ‘ভুলের ওপর ভুল’ বলে অভিহিত করেছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ‘পারস্পরিক সুবিধাদানের নীতির নামে’ একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা মূলত অন্য দেশের ন্যায়সঙ্গত স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করা এবং সমস্ত আন্তর্জাতিক বিধি-নিষেধকে অবজ্ঞা করে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে চলার নামান্তর।”

তিনি আরো বলেন, ‘এটা এক ধরনের একতরফাবাদ, সংরক্ষণবাদ এবং অর্থনৈতিক নিপীড়ন।”

চীনের অবস্থান হলো- শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত পার্থক্যের সমাধান করা হোক।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা এই উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কাকে আরো জোরালো করেছে। শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। নতুন শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বের প্রায় সব বড় শেয়ার বাজার দরপতনের মুখে পড়েছে।

মার্কিন শেয়ারবাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এর মূল্য আবারও তীব্রভাবে কমে যায়, আর ইউরোপের প্রধান শেয়ারবাজারগুলো, লন্ডনের এফটিএসই ১০০সহ, ৪ শতাংশের বেশি পতনের মধ্যেই দিনের লেনদেন শেষ করে।

এশিয়ার বাজারগুলো আরো বড় ধাক্কা খেয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক একদিনেই ১৩ শতাংশ পড়ে গেছে। ১৯৯৭ সালের পর এটি সবচেয়ে বড় পতন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প ওপর আর

এছাড়াও পড়ুন:

মেয়র পদ নিয়ে ইশরাকের মামলায় ইসির ভূমিকায় এনসিপির উদ্বেগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের মামলা, একতরফা রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কার্যক্রম ও তৎপরতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার বিষয়ে এনসিপি সর্বোচ্চ মনোযোগ দাবি করছে।

বিবৃতিতে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, উল্লিখিত মামলার প্রথম তিন বছর পাঁচ মাসে ৩২টি তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে মাত্র চার মাসে ১৭টি তারিখ দিয়ে মামলাটি তড়িঘড়ি করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। কিন্তু একই সময়ে অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে এত দ্রুততার সঙ্গে তারিখ ধার্য করা হয়নি। ফলে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল শুধু এই মামলার একটি পক্ষকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে অন্যায্য সুবিধা প্রদান করেছেন কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।’

এ মামলায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা রহস্যজনক ছিল দাবি করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এই মামলার বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে। এমনকি রায়ের পরে তারা উচ্চ আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা না করে মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘কমিশনের এমন তৎপরতা অস্বাভাবিক ও উদ্বেগজনক। এর আগেও আমরা দেখেছি নির্বাচন কমিশন তার নিরপেক্ষ আচরণ বজায় রাখার পরিবর্তে এমন সব বক্তব্য প্রদান করেছে, যা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিচ্ছে বলে জনগণ মনে করে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এই রায় ঘোষণার আগেই সংশ্লিষ্ট আইনের অধীন গত ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে পুরো মামলাটিই অকার্যকর হয়ে গেছে। এরপরও রায় ও তড়িঘড়ি করে কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের পেছনে কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা জনসাধারণের সামনে পরিষ্কার করতে হবে।’

আরও পড়ুনইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ ইসির২৭ এপ্রিল ২০২৫

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল এবং ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন আদালত। ইশরাক ২০২০ সালের ৩ মার্চ নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছিলেন। রোববার রাতে তাঁকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুনঅবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে, মেয়র পদে বসা নিয়ে বললেন উপদেষ্টা২৬ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়র পদ নিয়ে ইশরাকের মামলায় ইসির ভূমিকায় এনসিপির উদ্বেগ
  • ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বেইজিং: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী