ঈদুল ফিতরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর আলোচনায় উঠে এসেছে ‘দাগি’ সিনেমা। শিহাব শাহীন পরিচালিত এ সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো ও তমা মির্জা।
সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনীর আগে প্রেক্ষাগৃহে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মৌন প্রতিবাদ জানান দর্শকরা। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে এ প্রতিবাদ জানান সিনেমাটির প্রযোজক-পরিচালক ও শিল্পী-কলাকুশলীরা।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলার স্টার সিনেপ্লেক্সের নতুন শাখায় ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ দিন ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে ডাকা হয় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক’। এতে সমর্থন জানান দেশের সাধারণ মানুষও। পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ায় একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। শিল্পীসমাজের একাংশ সেই প্রতিবাদে একাত্ম হন।
আরো পড়ুন:
বিয়ে করলেন পর্দার ‘তোপসে’
অগ্নিদগ্ধ পবন কল্যাণের ৮ বছরের পুত্র
বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ‘দাগি’ সিনেমার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র সোনি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল, চলচ্চিত্র পরিচালক শিহাব শাহীন, সাংবাদিক-সাহিত্যিক সাজ্জাদ শরিফ ও আনিসুল হক প্রমুখ।
অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তারিক আনাম খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, ইন্তেখাব দিনার, বিজরী বরকতুল্লাহ, আফরান নিশো, তমা মির্জা, সুমন আনোয়ার, সুষমা সরকার, রাশেদ মামুন অপু, এ কে আজাদ সেতু, সোহেল মন্ডল, নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন, রায়হান রাফী, জাহিদ প্রীতম প্রমুখ।
সংগীতশিল্পী সাজিদ সরকার, মাশা ইসলামও সামিল হন প্রতিবাদে। মাশা বলেন, “সবার সঙ্গে বড় পর্দায় নিজের গাওয়া গান দেখতে ভালো লেগেছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে গানের ব্যবহার। গল্পের সঙ্গে একদম মিলে গেছে।”
‘বরবাদ’ সিনেমার প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমি এবং নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় উপস্থিত ছিলেন ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। তারা সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় বলেন, “খুবই সুন্দর গল্প এবং নির্মাণের সিনেমা ‘দাগি’। শিহাব শাহীন ভাই এবং আফরান নিশো ভাইকে নিয়ে আমার কিছু বলার নাই। আমি সিনেমাটা খুব উপভোগ করেছি।”
প্রযোজক শাহরিন আক্তার সুমিও সিনেমাটি দেখে তার মুগ্ধতার কথা জানান। তিনি বলেন, “চমৎকার নির্মাণের সিনেমা ‘দাগি’।”
রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সসহ দেশের আরো কিছু প্রেক্ষাগৃহে চলছে ‘দাগি’। মুক্তির পর থেকেই দর্শকদের আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। দর্শকদের এই ভালোলাগা আশা জাগাচ্ছে প্রযোজকদের। বিশেষ প্রদর্শনীতে আরও নতুন কিছু দেওয়ার আশ্বাস দেন এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহেন্দ্র সোনি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র আফর ন ন শ পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)