রাজশাহীর চারঘাটে মদপানে অসুস্থ হয়ে মাসুদ রানা ও নাদিম ইসলাম নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তারা মারা যান। দু’জনের বাড়ি উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নে। মাসুদ রানা সকালে সাড়ে সাতটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও নাদিম ইসলামকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান। 

এ ঘটনায় মোহাম্মদ টনি নামের আরও এক যুবক গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। তিনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন।
 
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ টনি জানান, নাদিম ইসলাম তার বন্ধু। গাড়ি না থাকায় মাসুদ রানার ভ্যান রিজার্ভ করে চলাফেরা করেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাসুদ রানা, নাদিম ও মেহেদীর সঙ্গে ঝিকরা এলাকার মামুন নামের এক ব্যক্তির কাছে মদ পান করতে যান। তিনি সামান্য একটু পান করার পর অসুস্থ বোধ করেন, তখন বিরত থাকেন। কিন্তু নাদিম ও রানা বেশি পরিমাণে মদ পান করে। রাতেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। 

মাসুদ রানার স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী রোববার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে আসেন। মদ পান করেছিলেন কিনা জানি না। রাতে দুটি বিস্কুট ছাড়া আর কিছু খাননি। সোমবার সারাদিন ঘুমিয়েছেন। সন্ধ্যার পর থেকে পেট ব্যথা শুরু হয়। গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা ভেবে রাত দুইটার দিকে হাসপাতালে নিলে সকালে মারা যান।’ 

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নিমপাড়া এলাকার দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মদপ ন ম ত য প ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ