পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 8th, April 2025 GMT
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিলের মেয়াদ গত ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়েছে। পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, তফসিলি ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং এই তহবিল হতে বিনিয়োগের বিষয়ে অনুসরণীয় নীতিমালা প্রদান করা হয়। এ তহবিলের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়। তবে ২০২১ সালে এক সার্কুলার অনুযায়ী এ তহবিলের আওতায় বেসরকারি উদ্যোক্তার নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য স্পেশাল পারপাস ভেহিকলের ইস্যুকৃত গ্রীন সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৮ পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে বিরাজমান অস্থির অবস্থার প্রেক্ষাপটে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজন ও বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোর মতামত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনায় পরিস্থিতি উন্নয়নে তথা আর্থিক খাতের সার্বিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিশেষ তহবিলের মেয়াদ নিম্নোক্ত শর্তাধীনে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
তিন পার্বত্য অঞ্চলে ব্যাংক বন্ধ ১৩ এপ্রিল
বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি
বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে বিশেষ তহবিলের বিনিয়োগ স্থিতি ক্রমান্বয়ে হ্রাসকল্পে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অনুমোদিত একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এ সার্কুলার জারির ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ সাইট সুপারভিশনে দাখিল করতে হবে। এই কর্মপরিকল্পনা যথা সময়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর মেয়াদপূর্তীতে এ তহবিলের অবশিষ্ট বিনিয়োগ (যদি থাকে) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৬ ক ধারা অনুসারে সলো এবং কনসোলিডেটেড উভয় ভিত্তিতে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ কোষের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। আবশ্যিকভাবে টোটাল ইনভেস্টমেন্ট ইন ক্যাপিটাল মার্কেট নামে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণীতে রিপোর্ট করতে হবে।
বিশেষ তহবিলের মেয়াদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে-বাংলাদেশ ব্যাংক হতে রেপো সুবিধার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে গৃহীত রেপো সুবিধা পুনঃনবায়নের ক্ষেত্রে এই সার্কুলারের সময়সীমা ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ হবে। বিশেষ তহবিলের আওতায় গঠিত ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওর বাজারভিত্তিক পুনঃমূল্যায়নের ক্ষেত্রে উক্ত সার্কুলারের সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে। এই সার্কুলারে বর্ণিত বিশেষ তহবিলের আওতায় ব্যাংকের সাবসিডিয়ারী কোম্পানির নিজস্ব পোর্টফোলিও গঠনের জন্য প্রদান করা চলমান ও আবর্তনশীল ঋণ সীমার সর্বোচ্চ মেয়াদ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩০ নভেম্বর ২০২৬ এবং এই পোর্টফোলিওর বাজার ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ন সংক্রান্ত সময়সীমা ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এর স্থলে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৬ হবে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ষ তহব ল র ম য় দ সময়স ম
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমতি ছাড়াই গাসিক কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিদেশ যাত্রা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন, তথ্য গোপন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক শাহেদ আলম নামে এক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তথ্য গোপন করে বেসরকারি পাসপোর্ট (নং A০১২৬৬৬১২) সংগ্রহ করেছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযোগকারী দাবি করেন, তিনি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন সময়ে কানাডা সফর করেছেন, যার কোনো অনুমোদন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৯ জুন কানাডা সফরের সময় তিনি প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কানাডায় সেকেন্ড হোম এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ করেছেন। তার নামে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচারের দুর্নীতির মামলাও চলমান রয়েছে। এমন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো পদে বহাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী বলেন, “তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন এবং গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সূত্র জানায়, গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। গাজীপুরবাসীর স্বার্থে এমন বেপরোয়া ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তথ্য গোপন করে বিদেশ যাত্রা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, প্রমাণ মিললে বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। শোকজের প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।”
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রেজাউল/এস