Samakal:
2025-09-17@23:35:51 GMT

পোশাকে বর্ষবরণ

Published: 8th, April 2025 GMT

পোশাকে বর্ষবরণ

পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতিতে অমলিন এক উৎসবের নাম। নানা উৎসব আয়োজনের পাশাপাশি নববর্ষের প্রথম দিনে নতুন পোশাক পরার রীতি চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। উৎসবের এসব পোশাকে থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ।
যে কোনো উৎসব-পার্বণে বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাক শাড়ি। বৈশাখ হলে তা আরও বেড়ে যায়। প্রতি বৈশাখেই তাই বাহারি শাড়ির পসরা সাজায় ফ্যাশন হাউসগুলো। শাড়ির সুতায় বা জামদানিতে ফুটে ওঠে একটি শাশ্বত রীতি, যা অতীতের গাঁথুনি আর বর্তমানের চেতনা একত্র করে। বাহারি রঙের শাড়ির উজ্জ্বলতা, কোমলতা– সবকিছু যেন নতুন কিছু শুরুর আহ্বান জানায়।
অন্যদিকে পহেলা বৈশাখে ছেলেরা নিজেদের সাজায় পাঞ্জাবির সাজে। আজকাল শুধু লাল-সাদা নয়, অন্যান্য উজ্জ্বল রংও প্রাধান্য পায় পাঞ্জাবিতে। বেলবুট, কুর্তা এবং ধুতি-চাদর পরিধানে পহেলা বৈশাখে পুরুষদের চেহারায় ফুটে ওঠে এক চিরন্তন সৌন্দর্য। 
যদিও বৈশাখের পোশাকের মধ্যে ঐতিহ্যিক শাড়ি এবং পাঞ্জাবির জনপ্রিয়তা অটুট, তবে আধুনিক সময়ের স্পর্শেও বৈশাখের পোশাকে নতুনত্ব এসেছে। ফিউশন স্টাইলের পোশাক এখন অনেকের কাছে প্রিয়। নারীরা এখন শাড়ির সঙ্গে পরছেন আধুনিক ব্লাউজ অথবা ফতুয়া, কুর্তার সঙ্গে লেহেঙ্গা। আবার ছেলেরা পাঞ্জাবি, কুর্তা এবং চমৎকার কটন বা সিল্কের শার্টের সমন্বয়ে এক নতুন সাজে নিজেদের রাঙাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নিত্যনতুন ডিজাইন, প্রিন্ট এবং বৈশাখী পোশাকের রঙের মিশেল পোশাকশিল্পে এক ভিন্ন মাধুর্য নিয়ে এসেছে। 
বৈশাখের পোশাকে রঙের প্রতি সবার আলাদা আকর্ষণ থাকে। বৈশাখ মানেই অনেকের কাছে লাল-সাদা পোশাকের বাহার। তবে ফ্যাশনবোদ্ধাদের অনেকে এখন এ ট্রেন্ড থেকে বেরিয়ে এসেছেন। কেউ একরঙা আবার কেউ নানা রঙের বর্ণিল পোশাক রেখেছেন পছন্দের তালিকায়। লাল-সাদার পাশাপাশি হলুদ, বেগুনি, কমলা, মেরুন, নীল, সবুজ, গোলাপি, বাদামিসহ প্রায় সব রংই প্রাধান্য পাচ্ছে বৈশাখী পোশাক তৈরিতে। 
ফ্যাশনবোদ্ধাদের মতে, গত কয়েক বছর পহেলা বৈশাখ রোজার সময়ে হওয়ায় উৎসবের আমেজে ভাটা ছিল। এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় নববর্ষকে ভিন্ন আঙ্গিকে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করবে বলে ফ্যাশনপ্রেমী বাঙালিরা অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। 
রাজধানীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা যায়,  ঈদের পরপরই শুরু হয়ে গেছে বৈশাখের বর্ণিল আয়োজন। যেখানে ফ্যাশন ডিজাইনাররা পোশাকে ফুটিয়ে তুলেছেন ভিন্নমাত্রার শৈল্পিক ছোঁয়া। পোশাকে রঙের পাশাপাশি উঠে এসেছে বাঙালি ঐতিহ্যের মোটিফ আর কারুকার্য।
এখন যেহেতু রোদের তীব্রতা বেশি তাই গরমের কথা চিন্তা করে ফ্যাশন ডিজাইনাররা সুতি কাপড়কে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। 
এবার গরমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুতি কাপড়ের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ আর পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি থাকছে। হ্যান্ড প্রিন্ট, ব্লক, বাটিক, অ্যাপ্লিকের কাজ, নকশি কাজের বাহারি ডিজাইন ফুটে উঠেছে বৈশাখের পোশাকে। পাশাপাশি রঙের বাহারি মেলা তো থাকছে। লাল-সাদা রংকে প্রাধান্য দিয়ে এর ওপর করা হয়েছে বাহারি সব নকশা।
 বৈশাখের পোশাক নিয়ে ফ্যাশন হাউস ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর কর্ণধার সৌমিক দাস বলেন, “আমরা বৈশাখের ডিজাইনে দুটি বিশেষ থিম নিয়ে কাজ করেছি। তার মধ্যে একটি হলো ‘কাঠের পুতুল’। কাঠের পুতুল বাঙালির লোকশিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অনন্য নিদর্শন হিসেবে সমাদৃত। সাধারণত হাতে তৈরি করা পুতুলের দেহজুড়ে থাকে নিখুঁতভাবে খোদাই করা দারুণ ডিজাইন ও তার সঙ্গে নানা রকম উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার। সেসব অতুলনীয় নকশার ছাপই আমরা ফুটিয়ে তুলেছি এবারের নববর্ষের পোশাকে। এ ছাড়া একটু বৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখে ‘কাঠের পুতুল’-এর নকশার পাশাপাশি ‘মুখোশ’-এর থিমও ডিজাইনে রয়েছে।”
পোশাকের রঙের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বৈশাখী উৎসবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে লাল, মেরুন ও সাদার সঙ্গে বিভিন্ন হালকা অথচ উজ্জ্বল রঙের নানারকম শেড। গরমের কথা বিবেচনায় রেখে কাপড়ে আরামের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে।’
বিশ্বরঙের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে এবারের বৈশাখে মোটিফের উৎস হচ্ছে চিরচেনা ‘প্রকৃতি’। পোশাক অলংকরণের অনুষঙ্গ হিসেবে প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান প্রাধান্য পেয়েছে। পোশাকের প্যাটার্নেও এসেছে ভিন্নতা। গরমের কথা মাথায় রেখে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি ও খাদি কাপড়। পোশাকগুলোয় উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তুলতে উজ্জ্বল রংয়ের ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে– টাই-ডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিন প্রিন্ট এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রিন্ট। 
কে ক্র্যাফটের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার খালিদ মাহমুদ খান জানান, এবারের বর্ষবরণের উৎসবে দেশীয় ঐতিহ্যকে নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে নানা রকম পোশাকে। তিনি আরও জানান, পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরামদায়ক বিষয়টি মাথায় রেখে ফেব্রিক হিসেবে নেওয়া হয়েছে কটন, জ্যাকার্ড কটন, সুইস কটন, হ্যান্ডলুম কটন, লিনেন, জর্জেট, সিল্ক, জয়শ্রী সিল্ক, হাফ সিল্ক ও অরগাঞ্জা। 
ফ্যাশন হাউস হরিতকীর সহপ্রতিষ্ঠাতা বলরাম পাল বলেন, বৈশাখে বরাবরই সাদা শাড়ি লাল পাড় মেয়েদের প্রথম পছন্দ। একঘেয়েমি কাটাতে আমরা সাদা শাড়ি লালচে খয়েরি রঙের মধ্যে ছোটবেলার লোকজ ছড়া কবিতা ও শিশুতোষ বইয়ের লোকজ ইলাস্টেশন নিয়ে শাড়ির ডিজাইন করেছি। এবার বৈশাখে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ঘিয়ে বা ক্রিম কালারের শাড়ি।
আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আনন্দের রং– সবকিছু মিশে একাকার হয়ে এই বিশেষ দিনটিকে বাঁচিয়ে রাখে। নববর্ষের এ সাজপোশাক শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মনের ভেতরেও নতুন আশার জাগরণ ঘটাবে– এটাই প্রত্যাশা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড জ ইন র ন ড জ ইন উৎসব র নববর ষ গরম র

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫