গাজায় পুনরায় হামলা ইসরায়েলের ‘ভুল’ পদক্ষেপ: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
Published: 9th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা পুনরায় শুরু করাকে তিনি ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন এবং ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েলের দখলকে ‘বেআইনি’ বলে অভিহিত করেছেন। খবর আনাদোলুর।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল), ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ১৩ জন সিলেক্ট কমিটির সভাপতির প্রশ্নের জবাবে সংসদীয় যোগাযোগ কমিটিকে বলেন, “আমি মনে করি দখল অবৈধ। ব্রিটিশ সরকার বরাবরই এই নীতিতে বিশ্বাসী।”
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্র ওষুধ আমদানির ওপর ‘বড়’ শুল্ক আরোপ করবে: ট্রাম্প
বৃহস্পতিবার তুরস্কে আবারো বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র
তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে গাজায় পর্যাপ্ত সাহায্য পৌঁছাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, “আমার মতে, শত্রুতা পুনরায় শুরু করা ভুল।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতিতে ফিরে যেতে হবে। সাহায্য আনতে হবে। জিম্মিদের উদ্ধার করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের ভূমিকা প্রয়োজন।” তিনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় বলে অভিহিত করেছেন।
তুরস্কের সরকারি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় ৫০ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গাজায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় যোগাযোগ কমিটিকে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং’।
তিনি বলেন, “আমাদের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং বিশ্বজুড়ে খুবই চ্যালেঞ্জিং।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, মার্কিন শুল্ক আরোপের ঘটনায় তিনি ‘হতাশ’। তিনি মনে করেন না যে, এটি দেশের অর্থনীতির জন্য বা বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির জন্য ভালো।
তবে তিনি আরো বলেন, “বিকল্প উপায়গুলো আমাদের আলোচনার টেবিলে রাখা উচিত এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ করা উচিত।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায় বিশ্ব বদলে যাচ্ছে। তবে তিনি এটিকে একটি ‘অস্থায়ী ক্ষণস্থায়ী পর্যায়’ বলেই মনে করেন।
স্টারমার বলেন, “দুটি জিনিস করা প্রয়োজন। প্রথমটি হলো আমাদের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করার জন্য আমাদের আরো অনেক কিছু করতে হবে, আরো দ্রুত এবং আরো অনেক কিছু করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাণিজ্যের বাধা কমানোর বিষয়ে আমাদের অন্যান্য সমমনা দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল শ ল ক আর প আম দ র মন ত র র জন য কর ছ ন ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।