মারা যাওয়ার ২ বছর পর অধ্যাপককে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন
Published: 9th, April 2025 GMT
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যে তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজের অধ্যাপক। অন্যদিকে রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে ওই শিক্ষককে রংপুরের পীরগাছা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। অথচ তিনি প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন।
যাঁকে নিয়ে এই পরিস্থিতি তাঁর নাম মোহাম্মদ আবদুল মুত্তালিব। বাড়ি রাজশাহীর কোর্ট স্টেশন এলাকায়। রংপুরের কারমাইকেল কলেজের সাবেক এই অধ্যাপক ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত অবস্থায় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রীসহ তাঁর এক ছেলে আছে।
গতকাল দেশের ১৩৫টি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই অধ্যাপক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দেয়। এর মধ্যে দুটি প্রজ্ঞাপনে ৪৯ জন করে এবং আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
আবদুল মুত্তালিবের সহকর্মী কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন আবদুল মুত্তালিব। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর আবদুল মুত্তালিব কারমাইকেল কলেজ থেকে রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।
আরও পড়ুনসেই অবন্তিকার প্রয়াত বাবাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন, বিস্মিত মা৬ ঘণ্টা আগেবানেশ্বর সরকারি কলেজের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে এখনো কর্মরত আছেন আবদুল মুত্তালিব। ওয়েবসাইটের প্রচ্ছদে অধ্যক্ষের বাণী ও ছবির জায়গায় তাঁর নাম ও ছবি দেওয়া রয়েছে। কলেজের দুজন শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মুত্তালিব হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান কলেজের সহকারী অধ্যাপক (রসায়ন) রেজাউল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দিন (১৬ ডিসেম্বর) কলেজে বিজয় দিবসের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচিতে অধ্যক্ষ স্যার (মুত্তালিব) যোগদানও করেন। এরপর তিনি তাঁর রুমে বসলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
রেজাউল করিমও এখন অবসরে। বললেন, ‘আবদুল মুত্তালিব স্যার মারা গেলেও কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্য আপডেট না হওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।’
এদিকে রংপুরের পীরগাছা কলেজে প্রয়াত আবদুল মুত্তালিবকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন এস এম আশাদুল ইসলাম। আশাদুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। অথচ আশাদুল ইসলামকে প্রজ্ঞাপনে এখনো গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক দেখানো হয়েছে। তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন করে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজে পদায়ন করা হয়েছে।
আশাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মুত্তালিব ও তাঁর ক্ষেত্রে বর্তমান তথ্য না নিয়ে ভুল পদায়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়কে এ তথ্য জানাতে কাল (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় যাচ্ছেন।
বিভ্রান্তির বিষয়ে কথা হয় প্রয়াত আবদুল মুত্তালিবের ভায়রা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর তাঁরা পরিবার থেকে পেনশন ও ভাতার জন্য মৃত্যুসনদসহ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। কিন্তু দুই বছর পর অধিদপ্তর তাঁকে নতুন করে পদায়নের মাধ্যমে এই ভুল করে কীভাবে?’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ত ত ল ব র ২০২৩ স ল র প রথম আল ক
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বিএনপিতে যোগ দিলেন কোচ ও বংশী জাতিগোষ্ঠীর দুই শতাধিক সদস্য
গাজীপুরে কোচ ও বংশী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুই শতাধিক সদস্য বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার নৌলাপাড়া এলাকার জেসন গেট মাঠে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
কোচ ও বংশী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এসব সদস্যকে বিএনপিতে বরণ করে নেন দলটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর, গাজীপুর সদর উপজেলার একাংশ ও সেনানিবাস এলাকা) আসনের দলীয় প্রার্থী রফিকুল ইসলাম। তিনি অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এসব সদস্যকে স্বাগত জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী সরকারের হাতেই তাঁরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, যেখানে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই নিরাপদে থাকতে পারে।
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সব সময়ই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করেছেন। আগামীর নেতা তারেক রহমানও তাঁদের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। তাঁর ঘোষিত ৩১ দফায় আদিবাসীদের দাবিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিএনপিতে যোগ দিয়ে কোচ ও বংশী জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা নিজেদের ভূমি ও বাসস্থান নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা জানিয়েছেন। এসব সমস্যার সমাধানে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।