শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যে তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজের অধ্যাপক। অন্যদিকে রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে ওই শিক্ষককে রংপুরের পীরগাছা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। অথচ তিনি প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন।

যাঁকে নিয়ে এই পরিস্থিতি তাঁর নাম মোহাম্মদ আবদুল মুত্তালিব। বাড়ি রাজশাহীর কোর্ট স্টেশন এলাকায়। রংপুরের কারমাইকেল কলেজের সাবেক এই অধ্যাপক ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত অবস্থায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রীসহ তাঁর এক ছেলে আছে।

গতকাল দেশের ১৩৫টি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই অধ্যাপক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগ দেয়। এর মধ্যে দুটি প্রজ্ঞাপনে ৪৯ জন করে এবং আরেকটি প্রজ্ঞাপনে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

আবদুল মুত্তালিবের সহকর্মী কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত কারমাইকেল কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন আবদুল মুত্তালিব। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর আবদুল মুত্তালিব কারমাইকেল কলেজ থেকে রাজশাহীর বানেশ্বর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।

আরও পড়ুনসেই অবন্তিকার প্রয়াত বাবাকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন, বিস্মিত মা৬ ঘণ্টা আগে

বানেশ্বর সরকারি কলেজের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে এখনো কর্মরত আছেন আবদুল মুত্তালিব। ওয়েবসাইটের প্রচ্ছদে অধ্যক্ষের বাণী ও ছবির জায়গায় তাঁর নাম ও ছবি দেওয়া রয়েছে। কলেজের দুজন শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মুত্তালিব হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান কলেজের সহকারী অধ্যাপক (রসায়ন) রেজাউল করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দিন (১৬ ডিসেম্বর) কলেজে বিজয় দিবসের কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচিতে অধ্যক্ষ স্যার (মুত্তালিব) যোগদানও করেন। এরপর তিনি তাঁর রুমে বসলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

রেজাউল করিমও এখন অবসরে। বললেন, ‘আবদুল মুত্তালিব স্যার মারা গেলেও কলেজের ওয়েবসাইটের তথ্য আপডেট না হওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।’

এদিকে রংপুরের পীরগাছা কলেজে প্রয়াত আবদুল মুত্তালিবকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আছেন এস এম আশাদুল ইসলাম। আশাদুল ইসলাম ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। অথচ আশাদুল ইসলামকে প্রজ্ঞাপনে এখনো গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক দেখানো হয়েছে। তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন করে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজে পদায়ন করা হয়েছে।

আশাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আবদুল মুত্তালিব ও তাঁর ক্ষেত্রে বর্তমান তথ্য না নিয়ে ভুল পদায়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি মন্ত্রণালয়কে এ তথ্য জানাতে কাল (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় যাচ্ছেন।

বিভ্রান্তির বিষয়ে কথা হয় প্রয়াত আবদুল মুত্তালিবের ভায়রা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর তাঁরা পরিবার থেকে পেনশন ও ভাতার জন্য মৃত্যুসনদসহ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন। কিন্তু দুই বছর পর অধিদপ্তর তাঁকে নতুন করে পদায়নের মাধ্যমে এই ভুল করে কীভাবে?’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ম ত ত ল ব র ২০২৩ স ল র প রথম আল ক

এছাড়াও পড়ুন:

৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক

বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য
  • ২০২৪ সালে রেকর্ড হারে বেড়েছে বিশ্বের সামরিক ব্যয়: সিপ্রির প্রতিবেদন
  • ২০২৬ এশিয়ান গেমসেও থাকছে ক্রিকেট
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
  • ৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
  • দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত
  • নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জবি শাখার ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
  • সড়কের কাজ ফেলে রেখে উধাও ঠিকাদার, দুর্ভোগে অর্ধলাখ বাসিন্দা
  • তালেবান সরকার কেন ভারতের দিকে ঝুঁকছে