নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করবে বিএসইসি
Published: 9th, April 2025 GMT
পুঁজিবাজারে নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল (এসএসি) গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি বিএসইসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ফলে, আগের নয় সদস্যের শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বাতিল হতে যাচ্ছে।  
এর আগে ২০২৩ সালের ২৮ মে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেন। দেশের পুঁজিবাজারে ইসলামী শরিয়াভিত্তিক বিভিন্ন প্রকার সিকিউরিটিজ ইস্যু আনা, ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট গঠন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করেছিল বিএসইসি। ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সিকিউরিটিজ মার্কেট শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল) বিধিমালা, ২০২২ নামে গেজেটটি প্রকাশ করা হয়।
শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের কাজ হলো— বিএসইসির চাহিদা অনুসারে বিভিন্ন ইস্যুতে পরামর্শ দেওয়া, শরিয়াহ-সংক্রান্ত গাইডলাইন প্রণয়ন, ইসলামী শরিয়াহসম্মত সিকিউরিটিজের মান প্রণয়ন, কোনো সিকিউরিটিজ শরিয়াহসম্মত কি না, সে বিষয়ে মতামত দেওয়া।
গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত বিএসইসি পুঁজিবাজারের জন্য গঠিত শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএসইসির নতুন সিদ্ধান্ত
বিএসইসির পক্ষ থেকে শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল সম্পর্কে কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আলোচনা ও সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশনের ২০২৩ সালের ২৮ মে জারি করা আদেশের মধ্যেমে গঠিত শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল বিলুপ্ত করা হবে। একইসঙ্গে নতুন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠন করা হবে।
কমিশন আরো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের জন্য ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জারি করা আদেশের মাধ্যমে গঠিত কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ ইস্যু করতে এবং ইসলামিক ক্যাপিটাল মার্কেট গঠন করতে কমিশন শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের প্রয়োজন মনে করছে। এজন্য নয় সদস্যের শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক ড.                
      
				
ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট চার সদস্য হলেন—অধ্যাপক আবু তালেব (ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং এক্সপার্ট), এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল (লিগ্যাল এক্সপার্ট), অধ্যাপক মো. নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া (অ্যাকাউন্টিং এক্সপার্ট) এবং মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপার্ট)।
শরিয়াহ অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজ নিয়ে আসার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজে আগ্রহী দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরো উৎসাহী হবেন।
ঢাকা/এনটি/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র ইসল ম ক সদস য গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক