সিরিয়ায় নতুন করে দখল করা অঞ্চলে পর্যটকদের নিয়ে যাবে ইসরায়েল। ইহুদিদের পাসওভার উৎসব উপলক্ষে গোলান মালভূমির ওই সব এলাকায় ইসরায়েলের বেসামরিক পর্যটকদের নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী রোববার শুরু হবে এই পর্যটন। চলবে এক সপ্তাহ। এরই মধ্যে প্রায় সব টিকিট কিনে নিয়েছেন পর্যটকেরা।

১৯৬৭ সালে আরব দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধের সময় গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর মালভূমির ‘বাফার জোন’ (সংঘাতের প্রভাব এড়াতে বিশেষ অঞ্চল) দখলে নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। বর্তমানে সিরিয়ার বেশ কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকা ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ইসরায়েলের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সামরিক পাহারায় বুলেটপ্রুফ বাসে করে পর্যটকদের ছোট ছোট দলকে সিরিয়ার ভূখণ্ডের সর্বোচ্চ আড়াই কিলোমিটার ভেতরে নেওয়া হবে। পথে পড়বে হারমন পর্বতের সিরীয় অংশ।

পর্যটকেরা রাদান নদীতে সাঁতার কাটতে পারবেন এবং নদীর তীরে ভ্রমণ করতে পারবেন। এ ছাড়া অটোমান সাম্রাজ্যের পরিত্যক্ত হেজাজ রেলপথের অংশ ঘুরে দেখতে পারবেন তাঁরা। এই রেলপথ অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ইস্তাম্বুলকে হাফিয়া, নাবলুস ও সৌদি আরবের পবিত্র স্থানগুলোর সঙ্গে যুক্ত করেছিল।

ইসরায়েলে সামরিক বাহিনীর ২১০তম ডিভিশনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন ও সংস্থা এই পর্যটনের আয়োজন করেছে। ‘নিরাপদ উত্তরে ফেরা’ নামে ইসরায়েলের একটি বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই পর্যটন চালু করা হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, ইসরায়েলের জন্য ওই অঞ্চলের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং যুদ্ধের সময়ের কাহিনিগুলো তুলে ধরা প্রয়োজন।

সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে দেশটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের দাবি, আসাদ সরকারের আমলে গড়ে তোলা অস্ত্রের মজুত ধ্বংস করতেই ওই হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া ১৯৭৪ সালের একটি চুক্তি লঙ্ঘন করে সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইসরায়েলের স্থলবাহিনী। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিরিয়ার বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন বাহিনীকে ইসরায়েল সীমান্ত থেকে দূরে থাকতে হবে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না পাওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবে ইসরায়েলি বাহিনী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খুলছে শনিবার, জাহাজ চালাবেন না মালিকরা