কনটেন্ট ক্রিয়েটরদেরকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) ‘এআই মাস্টারক্লাস সিজন ২’ শিরোনামে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনের মাধ্যমে ওয়ার্কশপে যুক্ত ছিলেন প্রায় পাঁচ শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী। কর্মশালা পরিচালনা করেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রবিন রাফান।
তিন ঘণ্টার ভার্চুয়াল ওয়ার্কশপে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের প্রবাসী বাংলাদেশি কনটেন্ট ক্রিয়েটররা অংশগ্রহণ করেন।
ওয়ার্কশপে হাতে-কলমে দেখানো হয় কীভাবে এআইয়ের মাধ্যমে কনটেন্ট ক্রিয়েশনের বিভিন্ন ধাপ সহজ, দ্রুত ও কার্যকর করা যায়। কীভাবে টেক্সট থেকে স্ক্রিপ্ট, ক্যাপশন ও হ্যাশট্যাগ তৈরি করা যায়, কীভাবে ইমেজ ও ভিডিও আপস্কেল করা যায় এবং কীভাবে টেক্সট থেকে ইমেজ, ভিডিও, মিউজিক, পূর্ণাঙ্গ গান ও ভয়েস জেনারেট করা সম্ভব। পাশাপাশি ইমেজ থেকে ভিডিও তৈরির পদ্ধতিও তুলে ধরা হয়, যা এআইনির্ভর আধুনিক কনটেন্ট প্রোডাকশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রশিক্ষক রবিন রাফান বলেন, কনটেন্ট ক্রিয়েশন শুধু শখের কাজ নয় বরং বর্তমান যুগে এটি বেকারত্ব সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসেবেও কাজ করতে পারে। তাই আমরা নিয়মিতভাবে কনটেন্ট নির্মাতাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি- কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কম সময়ে, কম খরচে এবং পেশাদার মানের কনটেন্ট তৈরি করা যায়।
তিনি জানান, সিজন-২ সমাপ্ত হওয়ার পর ঘোষণা করা হয়েছে ‘এআই মাস্টারক্লাস সিজন ৩’। পরবর্তী কর্মশালায় আরও ৫০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ১৫ই সিজন ৩ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশিক্ষক রবিন রাফান ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এআই ও ভিজ্যুয়াল ইফেক্টসভিত্তিক শিক্ষামূলক ও ইনফর্মেটিভ কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি টিকটকে ‘বেস্ট লং ফর্ম কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ পুরস্কার অর্জন করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এআই কনট ন ট ক র য রব ন র ফ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।