বগুড়া আদালতের হাজতখানায় বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক মারধরের শিকার হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় হাজিরা দিতে আসা হত্যা মামলার আসামিদের দ্বারা এ ঘটনার শিকার হন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন।

জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর জুলাই বিপ্লবকে কেন্দ্র করে শফিকের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলাসহ বগুড়া সদর থানায় মোট ১২টি মামলা করা হয়। এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর বুধবার রাত ৮টায় ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

আজ মঙ্গলবার তার আদালতে হাজিরা ছিল। এ জন্য তাকে কারাগার থেকে এনে আদালতে হাজিরা শেষে হাজতখানায় রাখা হয়। হাজতখানায় বিভিন্ন মামলার আরও বেশ কয়েকজন হাজতি অবস্থান করছিলেন। বেলা দেড়টার দিকে শফিকের হাতে থাকা পানির বোতল থেকে সাগর নামের হত্যা মামলার এক আসামির শরীরে পানি পড়ে। 

এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্কের একপর্যায় সাগর ও তার সহযোগী জলিল শফিককে মারধর শুরু করেন। পরে হাজতের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা শফিককে অন্যত্র সরিয়ে নেন।

এদিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় আদালত চত্বরে আবু সুফিয়ান শফিক সাংবাদিকদেরকে বলেন, “পুলিশ পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেনের নির্দেশে আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমি হাজতখানার বাথরুমে আশ্রয় নিলে সেখানেও আমাকে মারধর করা হয়। পুলিশ হেফাজতে থাকার পরও আমাকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। মারধরের পর আমাকে চিকিৎসা না দিয়ে তড়িঘড়ি করে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে। সাগর, জলিলসহ চারজন আমার ওপর হামলা করেছে। তারা সবাই হত্যা মামলার আসামি। এ ঘটনায় আমি মামলা করব।”

আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, “ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি হাজতখানায় গিয়ে শফিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাৎক্ষণিক বিষয়টি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়েছে। তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।”

ঢাকা/এনাম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ জতখ ন য় ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ